বিষয় সন্ধান

শুক্রবার, ১ জুলাই, ২০২২

মুদ্রানীতি ২০২২-২৩


বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জন্য
নীতিনির্ধারণী সুদহার বা রেপো রেট ৫% থেকে বাড়িয়ে ৫.৫০% শতাংশ করে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। এছাড়া বেসরকারি ঋন প্রাবাহের লক্ষমাত্র গত বারের ১৪.৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৪.১ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। গত দুই বছরের সম্প্রসারণশীল মুদ্রানীতি থেকে বেরিয়ে এসে এবার সংকচন মূলক মূদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ অবস্থায় এমন স্বীদ্ধান্তে ব্যাংক ইন্টারেস্ট রেট বাড়ার কথা। কিন্তু ৬-৯ ফিক্সড রেট ক্যাপের কারণে সেই সুযোগ নাই। ফলে এক দিকে গ্রাহরা মাত্র ৯% সুদে ঋণ পেলেও ব্যাংক কম সুদে বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ধার করতে পারবে না।  এতে  ঋণ দেয়ার বেপারে ব্যাংকগুল আগের চাইতে অনেক বেশি রক্ষণশীল আচরণ করবে।

অন্য দিকে দেশে চলমান ইনফ্লেশন এখন অনেকটা ইম্পোর্ট ড্রিভেন ইনফ্লেশন হয়ে গেছে। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারে পন্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং ডলারের দাম বৃদ্ধি জনিত ইনফ্লেশন। সুতরাং ইউক্রেনে যুদ্ধাবস্থা চলমান থাকলে ইনফ্লেশন কমে আসার সম্ভাবনা কম নিকট ভবিষ্যতে।

ইনফ্লেশনের কারণে এমনিতেই লোকজন সেভিংস ভেংগে খরচ করছে। ফলে ছোট ছোট ব্যাক্তিগত ব্যাংক ডিপোজিট দিন দিন কমে যাচ্ছে। আবার যাদের হাতে যথেষ্ট অর্থ আছে তারাও ব্যাংকে ডিপোজিট রাখতে চাইছেন না কারন ইনফ্লেশন এডজাস্ট করলে ব্যাংক ডিপোজিটের রিয়েল রিটার্ন নেগেটিভ। তারা নিশ্চিত ভাবেই বিকল্প বিনিয়োগ মাধ্যমের সন্ধানে আছেন।

উন্নত বিশ্ব এখন তাদের ইন্টারেস্ট রেট বাড়াচ্ছে ইনফ্লেশনকে কন্ট্রোল করার জন্য। আর এতে করে তাদের অর্থনীতিতে স্টেগফ্লেশন এমন কি ডিপ্রেশন, রিসিশন এর আশংকা জেগেছে। ফলে সেখানে কস্ট কাটিং শুরু হয়ে গেছে। এতে আমাদের ফরেন রেমিটেন্সের গ্রোথ কমে আসবে। এমন কি গার্মেন্টস এক্সপোর্ট গ্রোথ ও কাংখিত মাত্রায় না হবার সম্ভাবনা আছে। ফলে দেশে ডলার ক্রাইসিস ও সহসা কাটবে বলে মনে হয় না।

সব মিলিয়ে আমার ধারণা আগামী ৬-১২ মাস আমাদের মানি মার্কেটে টাইট সিচুয়েশ থাকবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং কমার্শিয়াল ব্যাংকগুল ঠিক ভাবে তারল্য পরিস্থিতি এবং ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য পতন সামলাতে না পারলে সমগ্র ব্যাংকিং সিস্টেমে অথবা ছোট-মাঝারি ব্যাংক গুলাতে লিকুইডিটি ক্রাইসিস ও দেখা দিতে পারে।

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন