বিষয় সন্ধান

মঙ্গলবার, ২ অক্টোবর, ২০১৮

আগামীর সম্ভবনা-৫: ডোরিন পাওয়ার

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল খাত গুলোর অন্যতম একটি হল বিদ্যুৎ খাত। গত আট দশ বছরে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা চার গুন বাড়লেও চাহিদার তুলনায় জোগান এখনো কম। ফলে দেশের বিদ্যৎ উৎপাদক কোম্পানি গুলোর সামনে নতুন নতুন পাওয়ার প্লান্ট প্রতিষ্ঠার মাধমে নিজেদের উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর যথেষ্ট সম্ভবনা রয়েছে। চাহিদা ও জোগান পরিস্থিতি সাম্যাবস্থায় না পৌঁছানো পরর্যন্ত বিদ্যৎ কোম্পানিগুলি ভাল ব্যবসা করবে - এটা প্রায় নিশ্চিত ।
   


ডোরিন পাওয়ার: আমাদের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ কোম্পানি গুলোর মধ্যে সামিট ও ইউনাইটেড গ্রূপ সব চেয়ে বড় ও পুরাতন কোম্পানি। তুলনা মূলক ছোট ও নতুন কোম্পানি গুলোর মধ্যে উৎপাদন সক্ষমতা ও পরিচালন মুনাফার ভিত্তিতে সবচেয়ে সম্ভবনাময় কোম্পানি গুলোর একটি হল ডোরিন পাওয়ার। ২০০৭-৮ সালে গ্যাস ভিত্তিক ২২ মেগাওয়াটের ছোট ছোট তিনটি পাওয়ার প্লান্ট নিয়ে ডোরিনের যাত্রা শুরু। সময়ের পরিক্রমায় হেভি ফুয়েল বেজ আরো দুইটি পাওয়ার প্লান্ট যুক্ত হয় ২০১৬ সালে। বর্তমানে ডোরিনের মোট উইপাদন ক্ষমতা
১৭৫.২ মেগাওয়াট।

ফেনী , টাঙ্গাইল ও নরসিংদীতে ২২ মেগাওয়াট ক্ষমাতার গ্যাস চালিত তিন প্লান্টে উৎপাদিত হয় ৬৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।হেভি ফুয়েল বেজ ঢাকা নর্রথ পাওয়ার জেনারেশনের উইপাদন ক্ষমতা ৫৫ মেগাওয়াট। এখানে ডোরিনের অংশ ৯৯.৪ % বা ৫৪.৬৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। ঢাকা সাউথ পাওয়ার জেনারেশনের উইপাদন ক্ষমতা ৫৫ মেগাওয়াট। এখানে ডোরিনের অংশ ৯৯.১৫% বা ৫৪.৫৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। মোট উৎপাদন ক্ষমতা ১৭৫.২ মেগাওয়াট।

এক্সপানশন প্রজেক্ট: ডোরিন পাওয়ার মে ২০১৭ সালে চাঁদপুরে একটি বিদ্যৎ কেন্দ্র করার চুড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। ১১৫ মেগাওয়াট হেভি ফুয়েল বেজ এই কেন্দ্রে ডোরিনের ৬০% বা ৬৯ মেগাওয়াটের অংশীদারিত্ব রয়েছে। সরকারের সাথে ১৫ বছর মেয়াদী চুক্তি অনুসারে আগামী জুলাই ২০১৯ সালে প্লান্টটি উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। ৮৫ মিলিয়ন ডলারে নির্মিত হতে যাওয়া এই প্লান্টের জন্য ইতিমধ্যেই ঢাকা ব্যাংকের সাথে ৬৫ মিলিয়ন ডলারে ঋণ চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। অপরদিকে বিশ্বখ্যাত জার্মানির ম্যান পাওয়ার জেনারেশনের সাথে ইঞ্জিন ও যন্ত্রাংশ সর্রবরাহের চুক্তি হয়েছে।


Trading Code: DOREENPWR

News: With reference to their earlier news (disseminated by DSE on 16.05.2017) the Company has further informed that Chandpur Power Generations Ltd. has signed a Power Purchase Agreement (PPA) with BPDB and Implementation Agreement with The GOB represented by the Ministry of Power, Energy and Mineral Resources on January 17, 2018 to develop a 115 MW HFO Power Plant at Chandpur, Bangladesh on Build Own Operate (BOO) basis for 15 years. The required commercial operation date (COD) of the power plant is July 16, 2019. Doreen Power Generations and Systems Limited own 60% shares of Chandpur Power Generations Limited.
Post Date: 2018-01-18




Trading Code:DOREENPWR
News:With reference to their earlier news (disseminated by DSE on 18.01.2018) the Company has further informed that the Board of Directors has decided to increase investment in Chandpur Power Generations Limited (under construction 115 MW HFO Power Plant at Chandpur) from 60% to 99.90% by purchasing 3,99,000 number of Ordinary Shares of Tk. 100.00 each from Doreen Power House and Technologies Limited.
Post Date:2019-04-15

১৫-০৪-২০১৯ এক ঘোষণার মাধ্যমে কোম্পানিটি জানিয়েছে যে, প্রস্তাবিত চাঁদপুর পাওয়ার প্লান্টের অংশীদারিত্ব ৬০% থেকে বৃদ্ধি করে ৯৯.৯% এ উন্নীত করা হবে।
 
বর্তমান আর্থিক অবস্থা: ২০১৬ সালে হেভি ফুয়েল বেজ দুই বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে আসার পর থেকে ডোরিন পাওয়ারের আর্থিক সক্ষমতা আমূল বদলে গেছে। ২০১৬-১৭ সালে কোম্পানির নেট মুনাফার পরিমান ছিল ৭২.৬৭ কোটি। উক্ত বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০% ক্যাশ ও ১০% স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়।

অর্থ বছর (২০১৭-১৮) সালে কোম্পানির মুনাফা ১৪% বেড়ে দাঁড়ায় ৮২.৮৯ কোটি এবং লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয় ১৫% ক্যাশ ও ১০% স্টক। আলোচ্য বছরে কোম্পানিটি ইপিএস ছিল ৭.৮৫ টাকা , এনএভি ৪০.৩৪ টাকা। 

অর্থ বছর (২০১৮-১৯) সালে কোম্পানির মুনাফা ১০.৮% বেড়ে দাঁড়ায় ৯১.৮৮ কোটি এবং লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয় ১৭% ক্যাশ ও ১৩% স্টক। আলোচ্য বছরে কোম্পানিটি ইপিএস ছিল ৭.৯১ টাকা , এনএভি ৪৪.১৯ টাকা।

আগামীর সম্ভবনা: কন্সট্রাকশন ফেজে থাকা ১১৫ মেগাওয়াটের ডোরিন চাঁদপুর নির্ধারিত সময়ে উৎপাদনে আসলে কোম্পানির আয়ে বড় পরিবর্তন ঘটবে। ২০১৮-১৯ সালে কোম্পানিটির মেগাওয়াট প্রতি নেট মুনাফা ছিল ৩৫ লক্ষ। এটিকে বেজ ধরলে চাঁদপুর প্লান্ট থেকে বছরে ৪০ কোটি টাকা মুনাফা হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এই বছর (২০১৭-১৮) ডোরিন পাওয়ারের আয়ের প্রবৃদ্ধি ছিল ১৪%। যদি এই প্রবৃদ্ধি ১০% ধরে হিসাব করা হয় তবে কোম্পানিটির সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ মুনাফা ২০১৮-১৯ সালে ৯১.১৮ কোটি ও ২০১৯-২০ সালে ১০০.৩ কোটিতে পৌছাবে। মূল আয় ১০০.৩ কোটির সাথে চাঁদপুর প্লান্ট থেকে অতিরিক্ত যুক্ত হবে ৪০ কোটি টাকা।

ডোরিন পাওয়ারের বর্র্তমান পেইড আপ ক্যাপিটাল ১০৫.৬ কোটি, যা পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত পাওয়ার কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্র্বনিম্ন। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের  ১০% স্টক যুক্ত হলে পেইড আপ ক্যাপিটাল হবে ১১৬.১৬ কোটি। ২০১৮-১৯ সালের জন্য ঘোষিত ১৩% স্টক ডিভিডেন্ডের কারনে পেইড আপ ক্যাপিটাল হবে ১৩১.২৬ কোটি। যদি প্রত্যাশা মত 
১৩১.২৬ কোটি পেইড আপের কোম্পানি ১৪০ কোটি মুনাফা করতে সক্ষম হয় তবে ২০১৯-২০ সালে ডোরিন পাওয়ারের সম্ভাব্য ইপিএস হবে ১০+ এবং এনএভি হবে ৪৮-৫০ টাকা।



ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান: বাই এন্ড হোল্ড এই ক্ষেত্রে একটি কার্র্যকরী বিনিয়োগ পন্থা হতে পারে। চাঁদপুর প্লান্টটি উৎপাদনে আসার আগে পর্যন্ত  স্টক ও ক্যাশ লভ্যাংশ ক্লেইম করে গড় ক্রয় মূল্য যথা সম্ভব কমিয়ে আনা। পাওয়ার কোম্পানিগুলি সাধারণত ১০ থেকে ১৫ পিই রেশিও তে লেনদেন হয়। সে ক্ষেত্রে ১০+ ইপিএস ও ৪৮-৫০ টাকা এনএভির কোম্পানির জন্য ১০০+  বাজার মূল্য প্রত্যাশিত। 

তবে মুনাফার এই অংকটা শুধুই একটা ভাল সম্ভবনা। সম্ভবনা বাস্তব রূপ পেতে হলে কোম্পানিটিকে যথা সময়ে এক্সপানশন প্রজেক্ট শেষ করতে হবে এবং টালমাটাল পুঁজি বাজার পরিস্থিতিতে আগামী দেড় -দুই বছর ধৈর্য ধরে অপেক্ষা শেষে অনুকূল সময় পেতে হবে আমাদের।


১৪ই ফেব্রুয়ারী ২০২২: আলহামদুলিল্লাহ ডরিন ১১৫ মেগাওয়াট চাঁদপুর কেন্দ্র অবশেষে উৎপাদনে এসেছে






তথ্য সূত্র:
১. ২০১৭-১৮ সালের অডিটেড অর্র্নিং  রিপোর্র্ট 
২. ডেইলি সান 
৩. ডেইলি নিউ নেশন 

৪টি মন্তব্য:

  1. চাঁদপুর পাওয়ার জেনারেশনে বিনিয়োগ বাড়াবে ডরিণ পাওয়ার

    চাঁদপুর পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড নামের কোম্পানিটির উৎপাদন ক্ষমতা হলো ১১৫ মেগাওয়াট। এর মধ্যে আগে এই প্রকল্পে ডরিন পাওয়ার জেনারেশনস অ্যান্ড সিস্টেমস লিমিটেডের মালিকানা ছিলো ৬০ শতাংশ। বাকি ৪০ শতাংশোর মালিক ছিলো ডরিন পাওয়ার হাউজ অ্যান্ড টেকনোলজিস লিমিটেড। আজকের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এর ৯৯.৯৯ শতাংশের মালিক হবে ডরিন পাওয়ার।

    http://www.sharebazarnews.com/archives/118515?fbclid=IwAR3L2u7lv5QiMXnTVqpJidMEVrInqDL7SpW0j0h4HFDriWjw09D0-DkURnc

    উত্তরমুছুন
  2. দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত শেয়ার হবে মনে হচ্ছে।

    উত্তরমুছুন
  3. ডরিনের বর্তমান অবস্থা কি। যথাসময়ে উৎপাদনে আসতে পারেনি চাঁদপুর

    উত্তরমুছুন
  4. অসাধারন এনালাইসিস-গ্রেট জব, Keep it for us.
    Thanks
    Shohel Rana

    উত্তরমুছুন