বিষয় সন্ধান

বুধবার, ১ জুলাই, ২০২০

মার্কেট মিথ-১: পুজিবাজারে ব্যাংকের ১২০০০ কোটি রেস্কিউ ফান্ড

পুজিবাজারের বিনিয়োগ করা অধিকাংশ লোক জনের ধারনা সরকার/বাংলাদেশ ব্যাংক মার্কেটকে রেস্কিউ করার জন্য ১২০০০ কোটি টাকার ফান্ডের অনুমোদন দিয়েছে । সুতরাং তারা বিনিয়োগ করতে বাধ্য!

অথচ এই ফান্ড গঠনের সার্কুলারে কোন বাধ্য-বাধকতা নাই । এটা সম্পূর্ণ ঐচ্ছিক একটা বিনিয়োগ সুবিধা । যা ব্যাংকগুল চাইলে আগামী পাঁচ বছর ( ফেরুয়ারী ২০২৫ পর্যন্ত) এর মধ্যে যে কোন সময় ফান্ড গঠন ও বিনিয়োগ করতে পারবে । টাকা ব্যাংক নিজের পকেট থেকে দিতে পারবে । চাইলে ৫% ইন্টারেস্টে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রেপোর মাধ্যমে ( ব্যাংকের কাছে থাকা সরকারী বন্ড বিল বাংলাদেশ ব্যাংকে  বন্ধক রেখে ) ধার করে আনতে পারবে । উল্লেখ্য সরকারী এই বন্ড বিল থেকে ব্যাংক গুলর বাৎসরিক আয় ৭.৫-৮.৫%

অর্থাৎ টাকা ব্যাংকের নিজস্ব অথবা ধার করা (যার জন্য বছর বছর ৫% সুদ গুনতে হবে ) । এই টাকা কোথায় কখন কি ভাবে বিনিয়োগ করবে তা সম্পুর্ণই ব্যাংকের নিজস্ব এখতিয়ার । সরকার/বাংলাদেশ ব্যাংক বড় জোড় অনুরোধ করতে পারে। আদেশ দিয়ে বাধ্য করার কোন নৈতিক বা আইনগত অবস্থান সরকারের নাই । আমার জানা মতে এখন পর্যন্ত ১৬৫০ কোটির ফান্ড গঠন করেছে ১৮ ব্যাংক । যার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ধার দিয়েছে মাত্র ১৩০ কোটি| আর গত ৩-৪ মাসে বিনিয়োগ হয়েছে ৮০ কোটি ! অথচ পুজিবাজার আশায় আছে ১২০০০ কোটির।

এই ১২০০০ কোটি নিয়ে আরেকটা শুভঙ্করের ফাঁকি আছে । বাংলাদেশে ব্যাংকের সখ্যা যেহেতু ৬০ টি (এখন আরো ২ টা বেড়েছে ) সেহেতু ৬০ গুনন ২০০ হিসাবে ১২০০০ কোটি। কিন্তু বাস্তবতা হল পুজিবাজারে পোর্টফলিও ইনভেস্টমেন্ট আছে ৩৫ টা ব্যাংকের । ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া, ব্যাংক অফ পাকিস্তান , শিলন ব্যাংক, এইচএসবিসি, স্টেন্ডার্ড চার্টার এর মত ব্যাংকগুলা কোন কালে আমাদের পুজিবাজারে বিনিয়োগ করে নাই আর ভবিষ্যতেও করবে বলে আশা করা যায় না । অন্যদিকে ফার্মাস, পুলিশ ব্যাংক, আনসার-ভিডিপি ব্যাংকের মত নতুন ব্যাংকগুলাও আপাতাত আসবে না। এরা নিজেরাই এখন পর্যন্ত পুজিবাজারে লিস্টেড না । সুতরাং বাস্তব ধর্মী চিন্তা করলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সুবিধা নিয়ে পুজিবাজারে ৬,০০০ থেকে ৭,০০০ কোটি টাকা আসতে পারে ।

তাই রেক্সিউ ফান্ড গঠন করতে হলে সরকারকে নিজের পকেট থেকে টাকা বের করতে হবে । ২০০৮ সালে পাকিস্তান ইনডেক্স ফ্লোর ইম্পজ করার আগে যেমন ২৫০০ কোটির ফান্ড বাজারে এনেছিল । শুধু কথায় আর চিঁড়া ভিজবে না । ভাল কিছু করার নিয়ত থাকলে সরকারকে কাজ করে প্রমাণ দিতে হবে । সরকার নিজের টাকায় কেনা শুরু করলে তবেই বেসরকারি সংস্থা কিনতে আসবে ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন