তাই আপনি যদি হোল্ডিং স্টক নিয়ে কনফিডেন্ট হন, অন্তর্নিহিত মূল্য জানেন তাহলে আর যাই হোক পানির দামে শেয়ার হাত ছাড়া করবেন না। উল্ট সুযোগ কাজে লাগাবেন। মার্কেট মেকাররা ডিস্কাউন্ট শপিং এ কোটি টাকা খরচ করলে আপনি হাজার টাকা খরচ করুন। ইন্ডেক্স পড়লে আমাদের পোর্টফলিও যেমন লাল হয়, তাদের পোর্টফলিও ও লাল। ছোট, মাঝারি, বড় কারো পুজিই আন-লিমিটেড নয়। ঈগল যত উচুতেই উঠুক এক সময় মাটিতে নামে বিশ্রাম নেয়ার জন্য। বিশ্রাম শেষে আবার উড়াল দেয়।
গত দশ বছরে অক্টোবর মাসে বাজার ভাল গিয়েছে এমন নজীর মাত্র একটি। সুতরাং বুঝাই যাচ্ছে এই সময়ে বাজার টালমাটাল অবস্থায় যাওয়ার যৌক্তিক কারণ আছে। এই সময় ডিসেম্বর ক্লোজিং কোম্পানি গুলোর ৩য় প্রান্তিক আর জুন ক্লোজিং কোম্পানি গুলোর ডিভিডেন্ড, রেকর্ড ডেট এবং ১ম প্রান্তিকের ডিক্লারেশন আসায় মার্কেট অনেক বেশি ফ্লাকচ্যুয়েট করে। পরীক্ষায় টেনেটুনে পাশ করা ছাত্রদের রেজাল্ট ঘোষণার আগের রাতের টেনশন ভর করে বাংলা বাজারের বিনিয়োগকারীদের মনে। কারন আর কিছুই না, এখানে জাংকা আর অর্ডিনারী কোম্পানির ছাড়া ছড়ি। বছরের শেষ প্রান্তিকে আয় কেমন আসবে, ডিভিডেন্ড কেমন দিবে সেই অনিশ্চয়তায় ভোগে সিংহভাগ বিনিয়োগকারী। মার্কেট মেকার গন এই সুযোগটাই নেয় প্রতি বছর।
মরার উপর খরার ঘা হয় দেশের টেক্স পলিসি। এই বাজারে ৪৯,৯৯,৯৯৯ টাকা ক্যাপিটাল গেইন করলে টেক্স দিতে হয় না। কিন্তু ১ টা ডিভিডেন্ড ইনকাম হলে নুন্যতম ১০% থেকে ৩০% পর্যন্ত টেক্স দিতে হয়। ফলে বড় বিনিয়োগকারীরা এখন আর ডিভিডেন্ড ক্লেইম করতে চায় না। ডিভিডেন্ড ডিক্লারের আগে আগে সেল দিয়ে ক্যাপিটাল গেইন বুক করে চুপচাপ বসে থাকে। ডিভিডেন্ড ডিক্লারেশন, ১ম কোয়ার্টার এবং রেকর্ড ডেটের এডজাস্টমেন্ট শেষে আবার তারা ছেড়ে দেয়া শেয়ার গুল কিনে নেয়। এই সমস্যার একটা যৌক্তিক সমাধান হতে পারে ১০-২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ডিভিডেন্ড ইনকাম টেক্স ফ্রি করে দেয়া। যাতে বড় বিনিয়োগকারীরা লং-টার্ম শেয়ার হোল্ড করতে উৎসাহিত হয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থা, সরকার বলে পুজিবাজারে লং-টার্ম বিনিয়োগ করুন। কিন্তু সুযোগ সুবিধা, টেক্স পলিসি, নিয়ম কানুন এমন বানায় যাতে ট্রেডিং আর সর্ট-টার্ম হোল্ডিং উৎসাহিত হয়!!
এই সিজনাল ফেনোমেনা গুল যদি আপনি জানেন আর নিজের হোল্ডিং স্টকের ফেয়ার ভ্যালু জানেন তাহলে অহেতুক প্যানিক হবেন না। ব্রড ইন্ডেক্স ইতিমধ্যেই টপ (৫৬৬০) থেকে ১০% পড়েছে আর হাজার পয়েন্টের রেলির (৪৬০০ টু৫৬৬০) ৫০% রিট্রেসমেন্ট করে ফেলেছে। ৩৮%, ৫০%,৬১% আমাদের বাজারের খুব কমন রিট্রেসমেন্ট লেভেল যেখান থেকে বাজার বেক করেছে অতীতে।
হাতে ক্যাশ থাকলে কিনুন। যাচাই-বাছাই করে বস্তা ভরে কিনুন। কারণ বড় ডিস্কাউন্টে বড় লোড না নিয়ে খুচড়া কেনাকাটায় বড় মুনাফার সম্ভবনা হাত ছাড়া হয়ে যায়। বঙ্গ বাজারের কনটেক্সটে ছবির বাংলা অনুবাদ কী হতে পারে?
কিনুন জখন মতিঝিলে ডিএসইআর পূরণ ভবনের সামনে আন্দোলন হয় !!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন