বিষয় সন্ধান

বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫

ভ্যালুয়েশন-১: বেঞ্জামিন গ্রাহাম নাম্বার

বাজারে নির্দিষ্ট কোন শেয়ারের দাম যৌক্তিক কি না তা বুঝার উপায় হল ভ্যালুয়েশন। তবে ভ্যালুয়েশন করার এত এত তরিকা রয়েছে যে নতুন কেউ তালগোল পাকিয়ে ফেলবে। ফাদার অফ ভ্যালু ইনভেস্টমেন্ট বেঞ্জামিন গ্রাহাম দুইটা সহজ ফর্মূলা দিয়ে গেছেন যা আপনি মোবাইল ক্যাল্কুলেটরে ২ মিনিট খরচ করেই হিসাব করতে পারেন।

তবে এইটা কোন সিলভার বুলেট না যে সব ক্ষেত্রে সমান ভাবে কার্যকর। আমি এর সাথে চেক করি কোম্পানির ROE >=10+ কি না। আর শেয়ারের বাজার মূল্য এই ফর্মূলায় পাওয়া নাম্বারের চাইতে ২০-৪০% কম (ডিস্কাউন্ট) কিনা। যত বেশি ডিস্কাউন্ট পাওয়া যাবে তত বেশি কনফিডেন্স নিয়ে শেয়ার কেনা যাবে।

উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ফোরকাস্টেড এনুয়াল NAVPS/BVPS 103 টাকা, EPS 19 টাকা।

ROE = EPS/NAV = 19/103 = 18.45%
BGN= square root (22.5*103*19) = 209

পুজিবাজারে আজকে বেচা-কেনা হয়েছে ১০৯ টাকায়! ৪৭% ডিস্কাউন্ট। দাম যত কমবে ডিস্কাউন্ট তত বাড়বে!!

বাংলা বাজারকে এই কারনেই আমি এত পছন্দ করি। চরম ইন-এফিসিয়েন্ট মার্কেট মাঝে মধ্যেই এরকম ব্লক-বাস্টার সুযোগ দেয়। BSC ভবিষ্যতে কত হবে জানি না তবে বিশ্বাস করি এটা ১০৯ টাকায় থাকার জিনিস না।


Bengamin Graham Number (BGN) দিয়ে ভ্যালুয়েশন করার পরে ব্যবহার কারিরা  ইউনিলিভার, জিপি এবং ম্যারিকোর ক্ষেত্রে এমন সংখ্যা পেয়েছেন যা স্বাভাবিক বাজার পরিস্থিতিতে অসম্ভব। এমন ক্ষেত্রে কি করা উচিত?

উত্তর : ভ্যালুয়েশন করার একাধিক উপায় রয়েছে। সুতরাং একটা ভ্যালুয়েশন যখন আপনাকে এমন সংখ্যা দিবে যা আপাত দৃষ্টিতে অসম্ভব কিংবা অবাস্তব মনে হবে তখন অন্যান্য ভ্যালুয়েশনের উপায় অবলম্বন করে মিলিয়ে দেখতে হবে কোনটা গ্রহনযোগ্য রেজাল্ট দিচ্ছে।

যেমন তিনি ইউনিলিভার, জিপি এবং ম্যারিকোর মত উচ্চ মানের তিনটি কোম্পানির ভ্যালুয়েশন করেছেন। বাস্তব অবস্থা চিন্তা করলে শেয়ার গুলোকে ঐ দামে পাওয়া প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। সুতরাং বেঞ্জামিন গ্রাহাম নাম্বার আপনাকে তেমন একটা সাহায্য করতে পারছে না এখানে। আপনাকে তাই ভিন্ন কোন ভ্যালুয়েশন ফর্মুলা এপ্লাই করতে হবে।

এখন তা হলে প্রশ্ন হতে পারে ইউনিলিভার, জিপি, ম্যারিকোর ক্ষেত্রে গ্রাহাম নাম্বার কেন ফেইল করল?
উত্তর হল গ্রাহাম নাম্বার মাত্র দুইটা পেরামিটার বা তথ্য - ইপিএস এবং এনেভি ব্যবহার করে। জিপি, ম্যারিকোর মত উচ্চ মানের কোম্পানিগুলোতে কারো স্ট্রং ডিভিডেন্ড হিস্ট্রি আছে (যেমন জিপি) , কারো স্ট্রং আর্নিং গ্রোথ আছে (যেমন ম্যারিকো)। সুতরাং আরো বেশি পেরামিটার/তথ্য দেয়া যায় এমন কোন ভ্যালুয়েশন ফর্মুলা দিয়ে ইউনিলিভার, জিপি, ম্যারিকোর ভ্যালুয়েশন করলে হয়তো গ্রহনযোগ্য/ বাস্তব সম্মত ফলাফল পাওয়া যাবে।








কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন