বিষয় সন্ধান

বুধবার, ২৭ মার্চ, ২০১৯

পেসিভ ইনভেস্টমেন্ট-১: ভাল মিচ্যুয়াল ফান্ড বাছাই করার উপায়




মিচ্যুয়াল ফান্ড আপনার আমার মতই পুঁজিবাজারে ব্যবসা করে। পার্থক্য হল তারা ক্রাউড ফান্ডিং করে বড় পুজি জোগাড় করে তা দিয়ে ব্যবসা করে। কিছু টাকা মানি মারর্কেটে ও অধিকাংশ টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে। আবার ইন্সটিটিউট হিসেবে কিছু অতিরিক্ত সুবিধা এরা পায় যেমন- আইপিও তে ফিক্স কোটা, সরকারী/ কর্পোরেট বন্ড ও প্রাইভেট প্লেসমেন্ট কেনার সুযোগ ।


ভাল মিচ্যুয়াল ফান্ড বাছাই করার উপায় -

১) ফান্ড ভবিষ্যতে মুনাফা দিতে পারবে কি না তা ৯৫% নির্ভর করে ফান্ড ম্যানেজারের দক্ষতার উচর। কারন আপনার/আমার টাকায় তিনিই বাজারে কেনা বেচা করবেন। দক্ষতা যাচাই করতে ঐ ফান্ড মেনেজার বা এসেট মেনেজমেন্ট কোম্পানির পুরোনো ফান্ডগুলর পার্ফমেন্স দেখুন। পুরনোদের মধ্যে আইসিবি, ভিয়াইপিবি ও এইমস এর ফান্ড ম্যানেজারদের ভরসা করা যায়। একদম নতুন দের মধ্যে স্ট্রেটেজিক পার্টনার, কেপএম, শান্তা ভাল করছে।

২) আমাদের বাজারে অধিকাংশ ফান্ড এখন ডিস্কাউন্ট এ পাওয়া যায়। অনেক ফান্ড আছে যাদের বাজার মূল্য তার মার্কেট এনেভির চাইতে ৩০-৫০% কম। আবার দেখা যায় কস্ট এনেভির চাইতে মার্কেট এনেভি বেশি থাকা সত্যেও বাজারে তার দাম কম। এই ধরনের ডিস্কাউন্ট এ থাকা ফান্ড বাছাই করুন।

কস্ট এনেভি - মিচ্যুয়াল ফান্ডের পোর্টফলিওর ক্রয় মূল্য হিসেবে এনেভি।
মার্কেট এনেভি - ফান্ড পোর্টফলিওর বর্ত্মান বাজার মূল্যে এনেভি।
মার্কেট এনেভি > কস্ট এনেভি = ফান্ড লাভে আছে।
কস্ট এনেভি > মার্কেট এনেভি = ফান্ড লসে আছে।

আমাদের বাজারে লাভে থাকা ফান্ড ১৫-২০% কমে পাওয়া যায়। আবার ১০-১৫% লসে থাকা ফান্ড ৩০-৫০% ডিস্কাউন্ট এ পাওয়া যায়। তিন মাস পর পর ফান্ডগুল তাদের পোর্টফোলিও পাব্লিক করে। পোর্টফওলিওর হোল্ডিং এ ভাল স্ক্রিপ্ট থাকলে যথা সম্ভব বেশি ডিস্কাউন্ট এ থাকা ফান্ড নির্বাচন করুন।

৩) আপনার পছন্দের ফান্ড এর অতীত ডিভিডেন্ড হিস্ট্রি দেখুন। ক্যাশ বোনাস দেয়া ফান্ডকে অধিক গুরুত্ব দিন। বছর বছর ০.৮-১ টাকা ক্যাশ বোনাস দেয়া ফান্ড ৬-৭ টাকায় কিনতে পারলে শুধু ডিভিডেন্ড নিলেই আপনি ১২%+ মুনাফা পাবেন। এমন হাই ইল্ডের ফান্ড অধিক নিরাপদ।

৪) মিচুয়াল ফান্ডগুল এখন আইপিও পায়। ১০০ কোটি পেইড আপের ফান্ড এর কোটা ও ৩০-৪০ কোটি পেইড আপের ফান্ড এর কোটা সাইজ একই। তাই আইপিও থেকে ছোট পেইড আপের ফান্ড অধিক মুনাফা করে।

৫) ফান্ডের ইপিএস এ নজর রাখুন ৩য় কোয়ার্টার চলে আসলেই মোটামুটি ধারনা করা যায় কোন ফান্ড কেমন ডিভিডেন্ড দিবে। মিচ্যুয়াল ফান্ড তার আয়ের ৭০% ডিভিডেন্ড দিতে আইনত বাদ্ধ।

শেষ কথা : মিচ্যুয়াল ফান্ড থেকে সর্বাধিক মুনাফা পেতে হলে আপনাকে ৫-১০ বছর মেয়াদে ধরে রাখার প্লান নিয়ে এগুতে হবে। ৫০-৬০% ডিস্কাউন্ট এ কেনা ইউনিট আপনি হয়ত ২০-২৫% লাভ পেয়ে ডিভিডেন্ডের আগেই বেচে দিতে পারেন। যেখানে ডিভিডেন্ড নিলে মুনাফা হত ১২-১৫%। তবে ডিভিডেন্ডের পর ওই ফান্ড আপনি আবার কবে ৫০-৬০% ডিস্কাউন্ট এ কেনার সুযোগ পাবেন তা আগাম বলা মুস্কিল। রেকর্ড ডেটের ১-২ মাসের মধ্যে পেতে পারেন আবার ৫/৬ মাস পরেও পেতে পারেন।বড় ডিস্কাউন্ট এ কেনা ইউনিট ২০-৩০% লাভে ছেরে দিয়ে অন্য ইউনিটে সুযোগ খোজা - এটাও কারো কারো স্ট্রেটেজি হতে পারে। তবে ভাল ফান্ড ম্যানেজার, লো পেইড ফান্ড ও বড় ডিস্কাউন্ট এই তিনটা যদি একবার পেয়ে যান তবে তা লম্বা সময় ধরে রাখার পক্ষপাতি আমি। লাভে ছেড়ে দিয়ে অন্য ফান্ডে সুযোগ নেয়া যেতে পারে তিন্তু এই তিনটা রেয়ার কম্বিনেশন সহজে অন্য কোথাও পাওয়া যাবে বলে আমি মনে করি না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন