বিষয় সন্ধান

রবিবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৮

আন্দ্রে কস্তোলানির ডিমতত্ত্ব

লেখকঃ সিহাব হাসান
প্রকাশ : বণিক বার্তা , এপ্রিল ০১, ২০১৮

১৯০৬ সালে হাঙ্গেরিতে জন্ম নেয়া আন্দ্রে কস্তোলানি ইউরোপীয় আর্থিক বাজারের সবচেয়ে বড় লিজেন্ডদের একজন। দর্শন ও ইতিহাসের এ ছাত্র বাজারের সেন্টিমেন্ট রিডার ছাড়া কিছুই ছিলেন না। সগর্বে নিজেকে স্পেকুলেটর বলে দাবি করতেন তিনি। ভ্যালু ইনভেস্টমেন্টের খুঁটিনাটি নিয়ে কোনোদিন ভেবেছেন বলেও জানা যায়নি। বিনিয়োগ সিদ্ধান্তের ভিত্তি বিবেচনা করলে ওয়ারেন বাফেটদের সঙ্গে তার ছিল যোজন যোজন দূরত্ব। তবে কিছু জায়গায় ছিল বড় মিল। এর মধ্যে ১ নম্বর হলো লগ্নির টাইমিং, ধরে রাখার মেয়াদ আর নিজ কৌশলে দৃঢ় থাকা।

কার্যত দুপক্ষের একই সূত্র, কম দামের জন্য এমন সময়ে কিনতে হবে, যখন শেয়ারবাজারের নাম শুনলেই সবাই আঁতকে ওঠে। ছোট ছোট ঝড়ঝাপটায় বিচলিত না হয়ে ধৈর্য নিয়ে তা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে হবে। একসময় বোকারা যখন দ্রুত টাকা বানানোর জন্য শেয়ারবাজারে ঝাঁপিয়ে পড়বে, তাদের কাছে বিক্রি করে নিজের মুনাফাটুকু বুঝে নিতে হবে। এ দর্শন আর কৌশলকে কস্তোলানি নিজের ‘ডিমতত্ত্ব’র মাধ্যমে সবার সামনে তুলে এনেছিলেন।

কার্যত দুপক্ষের একই সূত্র, কম দামের জন্য এমন সময়ে কিনতে হবে, যখন শেয়ারবাজারের নাম শুনলেই সবাই আঁতকে ওঠে। ছোট ছোট ঝড়ঝাপটায় বিচলিত না হয়ে ধৈর্য নিয়ে তা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে হবে। একসময় বোকারা যখন দ্রুত টাকা বানানোর জন্য শেয়ারবাজারে ঝাঁপিয়ে পড়বে, তাদের কাছে বিক্রি করে নিজের মুনাফাটুকু বুঝে নিতে হবে। এ দর্শন আর কৌশলকে কস্তোলানি নিজের ‘ডিমতত্ত্ব’র মাধ্যমে সবার সামনে তুলে এনেছিলেন।


জীবন ও কাজ

হাঙ্গেরির একটি বনেদি পরিবারে জন্ম নেয়া আন্দ্রে কস্তোলানি বুদাপেস্টে দর্শন আর শিল্পকলার ইতিহাস পড়ছিলেন। তার বাবার একজন বন্ধু প্যারিসের ইনভেস্টমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন, যার ইচ্ছায় পিতা তাকে সেখানে ব্যবহারিক জীবনে ঠেলে দেন। প্যারিসে কিশোর বয়সেই প্রথম ব্রোকারেজ সেবা, বিনিয়োগ আর স্পেকুলেশনের সঙ্গে পরিচিত হন তিনি। দ্রুত সবকিছু শিখে নিয়ে স্পেকুলেটর আর আরবিট্রেজার হিসেবে ভালোই করছিলেন তিনি। গড়পড়তা বিনিয়োগকারীদের মতো ঝুঁকি বিশ্লেষণ নিয়ে কোনো মাথাব্যথাই ছিল না তার। খেসারতও দিয়েছেন এর। বড় বড় বাজি ধরে প্যারিসে কয়েকবারই দেউলিয়া হওয়ার দশা হয়েছিল তার। তবে কাছের মানুষজনের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে আবারো ঘুরে দাঁড়ান দ্রুত। বড় ঝুঁকি, বড় প্রাপ্তির সহজ সূত্রে তার ওপর আস্থা রাখছিলেন অনেক বন্ধু। কারণ বাজারের গতিবিধি পর্যালোচনায় তিনি দিব্যদৃষ্টির মতো কিছু একটার প্রমাণ রাখতে শুরু করেন মাঝে মাঝেই।

১৯২৯ সালের শেষ দিকে যখন শেয়ারবাজার ধসে পড়তে শুরু করে, তখন তিনিও টের পাচ্ছিলেন শেয়ারবাজার অন্য সময়ের মতো স্বাভাবিক সংশোধনে যাচ্ছে না, যেমনটি ওয়াল স্ট্রিটে সিনিয়র কেনেডিরা বুঝতে পারছিলেন। প্যারিসে যুবক কস্তোলানির আগ্রাসী শর্টসেলিংয়ের গল্প শুনে শুরুর দিকে অনেক অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীই হাসছিলেন। তবে নিজের পরিচয় তুলে ধরলেন কস্তোলানি। ১৯৪০ সালে যখন জার্মানরা ফ্রান্স দখল করে বসল, কস্তোলানি নিজের টাকা-পয়সা নিয়ে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান। বাল্লে অ্যান্ড সিএ ফিন্যান্সিং নামের একটি বিনিয়োগ কোম্পানির মূল শেয়ারহোল্ডার ও নির্বাহী প্রধান হিসেবে এক দশক সেখানে ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর তিনি ইউরোপের ঘুরে দাঁড়ানোর উদ্যোগের সঙ্গী হন। ১৯৫০ সালে প্যারিসে ফিরে গিয়ে জার্মান পুনর্গঠন প্রচেষ্টার ওপর বাজি ধরেন।

নিজের বই ও আর্টিকেলগুলোয় কস্তোলানি বলেছেন, বৈদেশিক মুদ্রায় জার্মান সরকারের বন্ডগুলো মাত্র ২৫ শতাংশ দামে পাওয়া যাচ্ছিল। খুব কম বিনিয়োগকারীই সেখানে সাহস দেখাতেন। জার্মান সরকারের প্রধান তাদের অর্থনীতিকে ট্র্যাকে তোলার মিশনে সফল হলেই এগুলো যথামূল্যে চলে আসবে। এমন অবস্থায় আমি বাজিগুলো ধরেছিলাম এবং বড় মুনাফা পেয়েছিলাম।

আন্দ্রে কস্তোলানি ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র আর জার্মানির বন্ড, শেয়ার ও অন্যান্য সিকিউরিটিজের বাজারে বিনিয়োগ করে নিজের সম্পদ বহুগুণ বাড়িয়েছেন। সাত দশকের বিনিয়োগ অভিজ্ঞতা আর দর্শন শেয়ার করতে তিনি এক ডজনের বেশি বই লিখেছেন, যেগুলোর লাখ লাখ কপি বিক্রি হয়েছে। তবে দুঃসংবাদ হলো, একটি বইও ইংরেজি ভাষায় প্রকাশ হয়নি। পূর্ব এশীয় বিভিন্ন প্রকাশক স্থানীয় ভাষায় সেগুলোর অনুবাদ প্রকাশ করে ভালো সাড়া পেয়েছেন। অবশ্য বিভিন্ন ম্যাগাজিনে তার অনেক বক্তব্য সময়ে সময়ে ভালো আলোড়ন তুলেছে, যেগুলো ইংরেজির পাঠকদের সামনে কস্তোলানিকে তুলে ধরেছে। অবসর জীবনে জার্মান ‘ক্যাপিটাল’ ম্যাগাজিনে কস্তোলানির চার শতাধিক লেখা তাকে ইউরোপের বিনিয়োগকারীদের কাছে ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

বিনিয়োগকারীর সামষ্টিক সেন্টিমেন্ট ও বাজারের স্বরূপ সম্পর্কে নিজের দেয়া ডিমতত্ত্ব খুব মেনে চলতেন ভদ্রলোক। অর্থনীতি ও আর্থিক বাজারের চক্রাকার উত্থান-পতনের তত্ত্ব যখন ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত, শেয়ারবাজারে উত্থান-পতনের কিছু কমন প্যাটার্ন যখন সবারই কমবেশি দেখা হয়ে গেছে, তখন তার ডিমতত্ত্বকে হয়তো বিশেষ কিছু মনে হবে না। তবে ১৯২৯ সালের বিপর্যয়ে শর্টসেল থেকে ভালো মুনাফা করা কস্তোলানির পুরো ক্যারিয়ারের সঙ্গে মিলিয়ে দেখলে এটি বড় কিছুই। তার ভাষায়, শেয়ারবাজারে সাফল্য একটি কলা, বিজ্ঞান নয়। এক জীবনে শত জীবনের অর্জন এনে দেয়ার জন্য শেয়ারবাজারের সামষ্টিক সেন্টিমেন্ট পঠনের এ কলার বিকল্প নেই বলে বিশ্বাস করতেন ১৯৯৯ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করা কস্তোলানি।



ডিমতত্ত্ব
যৌক্তিক পর্যবেক্ষণের আলোকেই ডিমতত্ত্ব শেয়ারবাজারের হ্রাস-বৃদ্ধিকে একটি চক্রাকার ঘটনাপ্রবাহ হিসেবে স্বীকার করে নেয়। অন্যদের মতো কস্তোলানিও বিশ্বাস করতেন, শেয়ারবাজারে মূলত তিনটি পর্যায় থাকে, প্রথমটিতে কিনতে হয়, দ্বিতীয় পর্যায়ে ধৈর্য নিয়ে ধরে রাখতে হয় এবং তৃতীয় ধাপে বিক্রি করে দিতে হয়। আদর্শ অবস্থায় চক্রের ক্লকওয়াইজ মুভমেন্ট একটি চমত্কার ডিম উত্পন্ন করে। পর্যায় তিনটি আনুভূমিকভাবে ডিমটিকে তিন অংশ ভাগ করে— ওয়ান, টু, থ্রি।
অন্যদিকে উলম্বভাবে ডিমটিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়, এ ও বি। চিত্রে প্রদর্শিত ‘এ’ অংশ বুল মার্কেটকে এবং ‘বি’ অংশটি বিয়ার মার্কেট তথা মন্দা বাজারকে তুলে ধরে।
কস্তোলানি তার তত্ত্বের ডিমটিকে মোট ছয় ভাগে ভাগ করেন। ক্লকওয়াইজ হিসাব করলে প্রথমে আসে এ ওয়ান, তারপর এ টু এবং এ থ্রি। বাজার যখন ‘এ’ অংশের থ্রিতে প্রবেশ করে, তখন সেখানে নতুন ক্রেতার সমাগম বাড়ে। দ্রুত মুনাফার জন্য তারা প্রতিযোগিতা করে অযৌক্তিক দামে শেয়ার বা সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটিজ কিনে সেখানে ঝুঁকি বাড়ায় এবং বুদ্ধিমানরা তাদের কাছে সেগুলো বেচে মুনাফা বুঝে নেন।
ডিমতত্ত্বে কস্তোলানি বাজারের পরিস্থিতি অনুধাবনের জন্য প্রাইস ট্রেন্ডের বাইরে অন্য যে দুটি উপাত্তকে প্রাসঙ্গিক করে তুলেছেন, তা হলো ভলিউম আর লেনদেনকারীর সংখ্যা। এ তিন জিনিসের সমন্বয়েই গণসম্পৃক্ততার স্পেকুলেটিভ বাজারগুলোর প্রকৃত অবস্থা অনুধাবনের চেষ্টা করেছেন তিনি।
ওয়ান: এই ধাপে বাজারে শেয়ারের দর নিম্নমুখী কিংবা প্রায় স্থিতিশীল থাকে। ভলিউম কম আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো, এ সময় বাজারে বিনিয়োগকারী বা ট্রেডারের সংখ্যা তুলনামূলক কম থাকে।
টু: দর ঊর্ধ্বমুখী, ভলিউম আর বিনিয়োগকারীর সংখ্যা খুব বেশি না। তবে পর্যায়টি যত পরিণত হয়, বিনিয়োগকারীর সংখ্যা স্পষ্টতই বাড়তে থাকে।
থ্রি: দরে একটি বাবল সৃষ্টি হয়েছে বলে সতর্ক করেন মৌলভিত্তি বিশ্লেষকরা। তার পরও বিনিয়োগকারীদের ক্রমবর্ধমান আগ্রহ এ দরকে বহুদূর টেনে নিয়ে যায়। ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণে ভলিউম ক্রমেই বাড়তে থাকে। দীর্ঘমেয়াদি চক্রে এ ধাপে প্রায় প্রতিবারই নতুন নতুন রেকর্ড হয়।
বি ওয়ান: ওয়ান বা বি থ্রি ধাপে করা লগ্নি তুলে নিয়ে ক্রমেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন বুদ্ধিমান বিনিয়োগকারীরা। বাজারে আত্মবিশ্বাসী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমতে শুরু করায় দামও কমতে শুরু করে। লেনদেন ও বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও কমতে শুরু করে। এ ধাপে বাজার নিয়ে নিরাশ মানুষের সংখ্যা খুব বেশি থাকে না। বহু মানুষ আশা করেন, সাময়িক সংশোধন শেষে সবকিছু আগের ডিরেকশনেই এগোবে। তবে তাদের কারো কারো মধ্যে সতর্কতাও বাড়তে থাকে।
বি টু: পর্যায়টিকে বি ওয়ানের সম্প্রসারিত ধাপ বলা যেতে পারে। দর, ভলিউম ও বিনিয়োগকারীর সংখ্যা আরো কমতে থাকে। মাঝে মাঝে দর হঠাৎই বেশি কমে যায়। ধাপে ধাপে দর নামতে থাকে আর বিনিয়োগকারীর ভীতিও বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে এসে আরো বেশি মানুষের মধ্যে ভীতি বেড়ে গেলে সময়ে সময়ে দরপতনের দিনেও ভলিউম বাড়ে।
বি থ্রি: ধাপে এসে বেশির ভাগ বিনিয়োগকারীই বিশ্বাস করতে শুরু করেন, দরপতন আরো ত্বরান্বিত হবে। শেয়ার বেচে দেয়াই ভালো। নিম্নমুখী বাজারে ভলিউম অনেক বেড়ে যায় আর বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ক্রমেই কমতে থাকে।
এমনই কোনো পরিস্থিতির জন্য অপেক্ষায় থাকা কন্ট্রারিয়ানরা কম দামে শেয়ার কিনে বাজি ধরেন। তারা সংখ্যায় বাড়তে থাকলে একসময় ট্রেন্ড ট্রেডারদের কেউ কেউও এসে ক্রেতার সারিতে যোগ দেন। বাজার এ ওয়ান ধাপে ফিরে যায়।
শেয়ারবাজারে উত্থান-পতনের অন্যান্য চক্রাকার বৃত্তান্তের সঙ্গে ডিমতত্ত্বের পর্যবেক্ষণে বিশেষ পার্থক্য নেই। কিন্তু আন্দ্রে কস্তোলানি প্রাইস ট্রেন্ড, ভলিউম আর নাম্বার অব পার্টিসিপেন্টসের সমন্বয়ে আগ্রহীদের জন্য আরো সুনির্দিষ্ট একটি পথ বাতলে দিয়েছেন।
মজার ব্যাপার হলো, বুল মার্কেটে এ ডিমটির বাম পাশটা উঁচু হয়, অর্থাৎ ‘এ’ অংশটি দীর্ঘায়িত হয়। আর মন্দাবাজারে ডান পাশের উচ্চতা বাম পাশের তুলনায় বেশি। অর্থাৎ নিম্নমুখিতার মেয়াদ তুলনামূলক দীর্ঘস্থায়ী হয়।
পরিস্থিতিভেদে ডিমের নিচের অংশ উপরের অংশের তুলনায় বেশি চওড়া হতে পারে আবার ঠিক উল্টোটাও হতে পারে। তবে কস্তোলানির ডিমে শেয়ারবাজারের সব স্টাইলের উত্থান-পতনের চক্রকেই উপস্থাপন করা যায়।
 
ডিমতত্ত্ব চক্রের মেয়াদ
ডিমতত্ত্বে উল্লেখ করা চক্র শেয়ারবাজারের সব মেয়াদি চিত্রেই পাওয়া যাবে। যারা মিনিট চার্ট দেখে ডে ট্রেডিং করেন, তারাও এটি পর্যবেক্ষণ করবেন, আবার ৫ থেকে ২৫ বছর মেয়াদি কোনো চক্রেও এ বাস্তবতা দৃশ্যমান।

তবে মজার ব্যাপার হলো, কস্তোলানির মতো যারা অবসর জীবনে নিজের ইনভেস্টমেন্ট ক্যারিয়ারের কথা ভাবলে তৃপ্তির হাসি হাসতে পারেন, তাদের প্রায় সবাই লম্বা সময়ের চক্রগুলোর সঙ্গে পথ চলেছেন। কারণ চক্রটি যত স্বল্প সময়ের হয়, পরিস্থিতি পঠনে ভুল হওয়ার আশঙ্কা তত বেশি থাকে। এখানেই ভ্যালু ইনভেস্টমেন্টে সবচেয়ে সফল বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে তার আসল মিল। যদিও তিনি নিছক চাহিদা আর জোগানের পূর্বানুমান করতেন, যেখানে বাফেটরা থাকেন ইনট্রিনজিক ভ্যালুর অনুসন্ধানে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন