বিষয় সন্ধান

শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

আগামীর সম্ভবনা-২ঃ ইউনাইটেড পাওয়ার



সাম্প্রতিক সময়ে দেশের দ্রুত বর্ধনশীল খাতগুলোর মধ্যে অন্যতম হল বিদ্যুৎ খাত। সরকার বিগত আট বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন পাঁচ হাজার থেকে পনের হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করলেও চাহিদার তুলনায়ে এখনো তা যথেষ্ট পিছিয়ে। তাই নতুন নতুন বিদ্যুৎ প্লান্ট তৈরির অনুমোদন দেয়া হচ্ছে ব্যাপক হারে। যেহেতু চাহিদার তুলনায় যোগান কম সেহেতু বিদ্যুৎ কোম্পানিগুল চুটিয়ে ব্যাবসা করছে । এই ধারা আগামী বেশ কিছু বছর অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছি। দেশ বিদ্যুতে  স্বয়ংসম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যুৎ কোম্পানিগুল ব্যাবসা কমে যাবার তেমন সম্ভবনা নাই। 


চিটাগং আনোয়ারা প্লান্ট

বেসরকারী খাতে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী গ্রুপ গুলোর মধ্যে সামিট ও ইউনাইটেড গ্রুপের আধিপত্য সর্বজন স্বীকৃত। বেসরকারী খাতে সামিটের পর সব চেয়ে বেশি  বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ইউনাইটেড গ্রুপ। যার উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় হাজার মেগাওয়াট। এই গ্রুপের অনেকগুল কোম্পানির মধ্যে  ইউনাইটেড পাওয়ার আমাদের পুজিবাজারে লিস্টেড।

ইউনাইটেড পাওয়ার  মূলত ঢাকা ও চট্রগ্রাম ইপিজেডে বিদ্যুৎ সর্বরাহ করে তার ৮০ মেগাওয়াটের দুটি প্লান্টের মাধ্যমে। বাংলাদেশে একমাত্র তাদেরই সরাসরি গ্রাহকের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করার অনুমোদন আছে। অন্যরা সবাই সরকারের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করে এবং সরকার তা গ্রাহকের কাছে বিক্রি করে। কিন্তু  ইউনাইটেড পাওয়ার  সরাসরী গ্রাহক পর্যায়ে নিজস্ব বিতরন লাইনের মধ্যমে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারে। আর সরকারের সাথে বিদ্যুৎ বিক্রির চুক্তি ও রয়েছে ৩০ বছরেরে। এত ধীর্ঘ মেয়াদী চুক্তি অন্য কোন কোম্পানির অধিকারে নেই। 


প্রথম আলো ২১-৯-২০১৭


সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হল এদের কোন মেয়াদী ঋণ নেই, যা ছিল তা সবই পরিশোধ করা হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। তাই কোম্পানিটি এখন অধিক হারে ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিতে পারছে বিনিয়োগকারীদের। আর দিন দিন তাদের রিজার্ভ বাড় হচ্ছে। ফলে অর্থ অলস না রেখে তা বিনিয়োগ করায় মনোযগী হয়েছে কোম্পানিটি। এই লক্ষে বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবিকে তাদের পরিচালনা পরিষদে নিয়ে আসা হয়েছে সম্প্রতি।
 
কিছু দিন আগেই সরকার নতুন ২০০০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট করার অনুমোদন দিয়েছে। আমার জানা মতে ইউনাইটেড গ্রুপ এই বার মোট ৩০০ মেগাওয়াটের দুইটি ( একটি ১০০ ও অন্যটি ২০০) প্লান্ট করার অনুমোদন পেয়েছে। পাশাপাশি চট্রগ্রামে ৩০০ মেগাওয়াটের আরও একটি প্লান্ট তৈরির কাজ চলছে। সব ঠিক ঠাক ভাবে হলে আগামী বছর গ্রীষ্মের আগেই প্লান্টগুলো উৎপাদনে আসবে। 

বাজারে গুজব রয়েছে যে, এই প্লান্টগুলতে এবার ইউনাইটেড পাওয়ারের অংশিদারীত্ব থাকবে।  গ্রুপের চেয়ারম্যান ও কিছুদিন আগে সংবাদ মাধ্যমকে কোম্পানির কলেবর বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন। প্রকৃত পক্ষে কোম্পানিটির রিজার্ভে যথেষ্ট অর্থ আছে নতুন বিনিয়োগে যাবার জন্য। মাদার গ্রুপ ৩০০ মেগাওয়াটের নতুন কন্ট্রাক্টও পেয়েছে। তাই গুজব সত্যি হবার সমূহ সম্ভবনা রয়েছে বলে আমি মনে করি। যদি সম্ভবনা বাস্তবতায় অনুদিত হয় তবে আগামী বছর গুলতে আমাদের পুঁজি বাজারে ইউনাইটেড পাওয়ার আরও শক্তিশালী হয়ে আত্নপ্রকাশ করবে।




আপডেট-১ঃ [২০১৮-০১-০৭]  আলহামদুলিল্লাহ! ২০১৭ সালে শেয়ারটি দারুণ মুনাফা দিয়েছে। প্রথম ধাপে ১৪৫ থেকে ১৮৯ ও ডিভিডেন্ডকে কেন্দ্র করে ১৬০ থেকে ১৯৫। আশাতীত মুনাফা!


তথ্যসূত্রঃ

১। ওয়েস্টিলা 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন