বিষয় সন্ধান

বুধবার, ২৮ মার্চ, ২০১৮

শুভংকরের ফাঁকি : কষ্ট প্রাইসে এক্সপোজার গণনা

 

ব্যক্তিগত পর্যায়ে পরিচালিত এক জনমত জরিপে ৫৬ জন বিনিয়োগকারীর মধ্যে ৪৬ জন বিশ্বাস করেন যে, 'বাংলাদেশ ব্যাংক কস্ট প্রাইসে এক্সপোজার গণনার সার্কুলার দিলে বাজার ভাল হবে।' প্রায় ৮২ শতাংশ বিনিয়োগকারী যেহেতু এটা বিশ্বাস করছেন সেহেতু কস্ট প্রাইসে এক্সপোজার গণনার সার্কুলার আসলে বাজার সল্প সময়ের জন্য হলেও ভাল হতে পারে। সংখ্যা গরিষ্ঠের শক্তি অবশ্যই কিছু না কিছু আছে।

তবে আমার ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ বলে বাজার ভাল হবার সাথে কস্ট প্রাইসে এক্সপোজার গণনার সরাসরি কোন সম্পর্র্ক নাই। এটা ইনস্টিটিউট গুলির মার্র্কেটকে জিম্মি করে সুবিধা আদায় করার চেষ্টা মাত্র। গত বছর ইনস্টিটিউট গুলি পুঁজি বাজারে ভাল ব্যবসা করেছে , অধিকাংশই বড় প্রফিট বুক করেছে। সেই মুনাফার টাকা তারা বাজারে আর আনে নাই। ২-৪ টা ব্লু চিপ স্টক ছাড়া বাকি সব স্টক ২০-৫০% কারেকশন হয়েছে ইতিমধ্যে। মানে বর্র্তমান মার্র্কেট প্রাইসে এক্সপোজার গণনা করলে তাদের সবার কাছে বিনিয়োগ করার মত যথেষ্ট পুঁজি থাকার কথা কিন্তু তারা বাজারে আসছে না। মার্রচেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারদেড় দুই সঙ্গগঠনের নেতারাও সরাসরি বলেছেন তাদের কাছে পুঁজি আছে কিন্তু বাংলাদেশ ব্যংকের নীতির জন্য তারা বাজারে আসছেন না।

আসল ঘটনা হল মার্র্কেট প্রাইসে এক্সপোজার গণনার মূল লক্ষ ছিল মার্র্কেট স্টেবল রাখা। যখন বাজার বাড়তে থাকবে তখন ইনস্টিটিউট শেয়ার বিক্রি করে সাপ্লাই বাড়াবে আবার শেয়ারের দাম কমলে তারা কিনে সপোর্র্ট দিবে। এই জিনিসটা মার্র্কেট প্রাইসে এক্সপোজার গণনার মাধ্যমেই সম্ভব। ঠিক যেমন গত সেপ্টেম্বর-নিভেম্বরে ইনস্টিটিউট গুলি বাধ্য হয়ে শেয়ার বিক্রি করেছিল। দাম কমায় এখন তাদের কেনার কথা কিন্তু তাঁরা তা করছে না।

বাজার ভাল করার জন্য সকলের দাবির মুখে বাংলাদেশ ব্যংক যদি কস্ট প্রাইসে এক্সপোজার গণনা শুরু করে তবে হয়ত বর্র্তমান বিপদ কাটবে কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য বড় বিপদের বীজ বোনা হবে। বাজার যখন আবার বারা শুরু করবে তখন কোন ইনস্টিটিউটকেই বাদ্ধ করা যাবে না শেয়ার বিক্রি করে সাপ্লাই বারবার জন্য। ডিমান্ড বাড়বে কিন্তু পরর্যাপ্ত সাপ্লাই থাকবে না। ফলে আবার আরেকটা ২০১০ এর মত বড় বাবল তৈরী করে ইনস্টিটিউটগুলি মার্র্কেট লুট করার সুজোগ পাবে। কারন গত তিন-চার বছরে এটা প্রমান হয়ে গেছে যে, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা সংখ্যা গরিষ্ঠ হলেও বাজার নিয়ত্রনে তাদের সক্ষমতা কম। অপ্রিয় সত্য হল মার্র্কেটের নিয়ন্ত্রণ এখন বড় পুঁজির ইনস্টিটিউটগুলির হাতে।        

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন