বিষয় সন্ধান

শনিবার, ২১ মার্চ, ২০২০

শেয়ার মূল্যে ফ্লোর প্রাইস ও ভবিষ্যৎ সম্ভবনা

 [এই বক্তব্য একান্তই আমার নিজস্ত বিচার-বুদ্ধি ও বিশ্লেষনের ফসল। অনেকেই হয়ত এক মত নাও হতে পারেন।আর আমার ধারনা অনুযায়ী বাজার চলেবে তা ও আমি আশা করি না।]




পুজিবাজার নিয়ে সরকার যা কিছু করা সম্ভব (পলিসি ও লিকুইডিটি সাপোর্ট) তা করেও কোন ফল না পেয়ে অবশেষে পতন থামাতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছে। বাজারে লেনদেন হওয়া সব স্টকের ফ্লোর প্রাইস নির্ধারন করে দিয়ে বাজারের গতিতে বাধ দিয়েছে। উল্লেখ্য যে, বাজারের এই গতি স্বাভাবিক না কি অসভাবিক ছিল তা নিয়ে অবশ্য অনেকের অনেক রকম চিন্তা ভাবনা আছে। কিন্তু এটা নিশ্চই সবাই স্বীকার করবেন যে - সরকারের এই পদক্ষেপ নজিরবিহীন। যা আমাদের দেশের পুজিবাজারে তো বটেই সারা দুনিয়ার অন্যান পুজিবাজারেও খুব বেশি ঘটে নাই।

তীব্র পতন থেকে বাঁচতে পুজিবাজার সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখার দাবী যখন জনপ্রিয় হচ্ছিলো তখন সরকার এমন এক ব্যবস্থা করল যাতে সাপ ও মরে লাঠি ও না ভাঙ্গে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বাজার ও খোলা থাকবে আবার শেয়ারের মূল্যও ফ্লোর প্রাইসের নিচে যাবে না।

আমার বিবেচনায় সরকার এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কিছু সময় নেয়ার ব্যবস্থা করেছে। এই সময়ে পুজিবাজারের বেইল আউট ফান্ড গঠন, বিএসইসি পুনঃগঠন, দেশে ও বিদেশে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি এবং বিনিয়োগকারীদের পেনিক থেকে বের করে কাম-ডাউন করা। উল্লেখিত কাজগুল ঠিকঠাক হলে বিনিয়োগকারীদের কনফিডেন্স বুস্ট-আপ হলে এই আর্টিফিশিয়াল সাপোর্ট সরিয়ে দিয়ে বাজারকে স্বাভাবিক ধারায় ফিরিয়ে আনবে। ফলাফল শেষ পর্যন্ত কি হবে তা আগাম অনুমান প্রায় অসম্ভব।

আগেই বলেছি যে, এই ধরনের অস্বাভাবিক পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক পুজিবাজারে খুব একটা ঘটে নাই। অনলাইনে খোজ খবর করে ২০০৮ সালে পাকিস্থানের পুজিবাজারে কাছাকাছি একটা ঘটনা পাওয়া যায়। করাচী স্টক এক্সচেঞ্জ ২০০৮ এর আগস্ট মাসে প্রায় ৪১% সূচক পতনের পড়ে ইন্ডেক্সে ফ্লোর সেট করে। ৫ মাস পরে সেই ফ্লোর তুলে দেয়ার পর বাজার আবারো পতনের ধারায় ফিরে যায়। ফ্লোর থেকে আরো ৪৭% পতন ঘটে আর টপ থেকে ৭০% পতন শেষে বাজার সাপোর্ট পায়। যেখান থেকে করাচি এক্সচেঞ্জ প্রায় ১০ গুন বেরেছে ২০০৯ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত।




আমাদের পুজিবাজার হুবহু পাকিস্তানের মত হবে তা আগাম বলা সম্ভব না। তবে করাচী এক্সচেঞ্জ থেকে আমার আন্ডার্সেন্ডিং হল - ফ্লোর প্রাইস সেট করে/ আর্টিফিশিয়াল সাপোর্ট দিয়ে বাজারের গতিতে সাময়িক বাধ দেয়া সম্ভব হলেও সেই বাধ সরে গেলে বাজার তার স্বাভাবিক গতিতেই ফিরে যাবে এবং নিজের শক্তিতেই তার সাপোর্ট খুজে নিবে। তাই আমাদের পুজিবাজারের প্রকৃত সাপোর্ট ৩৬০০ না আরো নিচে তা একমাত্র ভবিষ্যৎই ভাল বলতে পারে। মার্কেট সাপোর্ট যেখানেই থাক আমাদের অর্থনীতি উন্নয়নের ধারায় থাকলে ভবিষ্যৎ পুজিবাজার ও সেই দিকেই ধাবিত হবে বলে আমার বিশ্বাস। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন