বিষয় সন্ধান

সোমবার, ১৮ মে, ২০২০

সামিট পাওয়ার (আপডেট) : দেশী কোম্পানির মাল্টিন্যাশনাল কর্পোরেট হয়ে উঠা



আমাকে যারা ব্যাক্তিগত ভাবে চেনেন জানেন তারা এটাও জানেন যে -'সামিট পাওয়া' নিয়ে আমার বিশেষ পক্ষপাতিত্ত আছে। এমন নয় যে, এই স্ক্রিপ্ট থেকে বিগত বছর গুলতে প্রচুর মুনাফা করেছি বলেই এই কোম্পানির প্রতি আমার অতিরিক্ত ভালোবাসা। গত ৪-৫ বছরে কোম্পানিটি যত অবজার্ভ করছি ততই তাদের ব্যবসায়ীক দক্ষতা ও ব্যবস্থাপনা দেখে মুগ্ধ হচ্ছি । ধীরে ধীরে দেশের পরিবার কেন্দ্রিক একটা কোম্পানি কি ভাবে মাল্টিন্যাশনাল কর্পোরেটে রূপ বদল করেতে তা দেখছি ।    আজ আমার সেই অবজার্ভেশন গুল  আপনাদের সাথে শেয়ার করছি -


  • সামিট সরকারি দল আওয়ামিলীগ ঘেষা কোম্পানি তা বলার অপেক্ষা রাখে না।  শুরুতে দলীয় বিবেচনা হয়তো অনেক বেশি প্রজেক্ট পেয়েছে যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় সাভাবিক।
  • কিন্তু রাজনৈতিক বিবেচনায় কাজ পাওয়া ও কোয়ালিটি কাজ করার মধ্যে বিস্তর ফারাক। দেশে বেসরকারি পর্যায়ে যত পাওয়ার প্লান্ট এখন পর্যন্ত তৈরি হয়েছে তার মধ্যে দ্রুততম সময়ে প্লান্ট তৈরির ৩ টি রেকর্ডের মালিক এই কোম্পানি। দেশে সরকারি - বেসরকারি প্রজেক্টের ডেড লাইন মিস করা যেখানে ডাল-ভাত ব্যাপার সেখানে সামিট তার সর্বশেষ ২ টা প্লান্ট ১৮ মাসে (কড্ডা ৩০০ মেগাওয়াট) ও অন্যটা ৯ মাসে (কড্ডা ১৫০ মেগাওয়াট) তৈরি করেছে এবং প্রজেক্ট ডেডলাইনের মধ্যেই উৎপাদনে এসেছে। যা কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট স্কিল এর পরিচয় দেয়।
  • বেসরকারি বিদ্যুৎ খাতে সামিট এখন সব চেয়ে বড় কোম্পানি। রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রজেক্ট পাওয়া আর ২০ বছর ব্যবসা করে পাওয়ার সেক্টরের লিডার হওয়ার মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত। এর জন্য ব্যবসায়ীক যোগ্যতা ও দক্ষতা লাগে শুধু সরকারি আনুকুল্য থাকলেই হয় না। প্রায় ২০০০ মেগাওয়াট উতপাদন ক্ষমতা নিয়ে সামিট গ্রুপ এখন দেশের ১০% বিদুতের মালিক। বিদ্যুৎ ব্যবসায় এরা টিকতে না পারলে আর কেউ টিকবে বলে আমার বিশ্বাস হয় না।
  • বছর তিনেক আগে সামিট গ্রুপ বাংলাদেশ থেকে সিংগাপুরে সিফট হয়েছে। এতে কোম্পানিটি বেশ কিছু সুবিধা পেয়েছে। সামিট এখন সিংগাপুর ও জাপানি জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি। পরিবার কেন্দ্রিক গ্রুপ থেকে এরা এখন মাল্টিন্যাশনাল কর্পোরেট। ফলে কোম্পানির সাস্টেইনিবিলিটি অনেক বাড়বে।
  • আওয়ামীলিগের রাজনৈতিক আনুকুল্য না পেলেও কোম্পানির ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত হয়েছে। যদি কখোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পরে তবে সিংগাপুর ও জাপানি সরকারের সহায়তা তারা পাবে। প্রতিটি রাষ্ট্র তার নিজ নিজ দেশের কোম্পানির সার্থ দেখে।
  • সিংগাপুরে রেজিস্ট্রার্ড কোম্পানি হওয়ার সব চেয়ে বড় সুবিধা হল অর্থনৈতিক। বাংলাদেশের কোম্পানি গুল দেশি ব্যাংক থেকে প্রজেক্ট ফাইনান্স নিলে ইন্টারেস্ট গুনতে হয় ৯%। যা কিছুদিন আগেও ১২-১৪% ছিল। আর বিদেশি উৎস থেকে লোন নিলে বাংলাদেশের কান্ট্রি রেটিং অনুযায়ী ইন্টারেস্ট রেট ৫-৫.৫%। আর সিংগাপুরে কান্ট্রি রেটিং বেশি ভাল থাকায় সামিট লোন নিতে পারবে ৩-৩.৫% এ। এটা বিদ্যুতের মত ক্যাপিটাল ইন্টেন্সিভ ব্যবসায় সব চেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট।
  • প্রায় ৫০% কমে ফরেন ফান্ডিং পাওয়ায় ভবিষ্যতে সামিট তার প্রতিযোগি কোম্পানিগুলোর তুলনায় অধিক মুনাফা করবে। পাশাপাশি নতুন প্লান্টের টেন্ডার গুলোয় কম রেটে বিডিং করে কাজ পাবে।

আমার পরিচিত জনরা অবশ্য হরহামেশাই বলেন- এত ভাল কোম্পানি এত গুলগান গান কিন্তু পুঁজি বাজারে এই স্টকের দাম কেন বাড়ে না? হ্যা ১১ শ কোটি পেইডাপের হাতি মার্কা কোম্পানি ডাউন ট্রেন্ড মার্কেটে সহজে নড়বে না। দূর্বল বাজার পরিস্থিতিতে এটা  ঘোড়ার মত দৌড় যেমন দিবে না আবার খড়কুটোর মতো কুবাতাসে উড়েও যাবে না। গত ৪-৫ বছরে  ৩৫ টাকা থেকে ৪৫/৫০ টাকায় উঠা নামা করছে । ট্রেডিং এ  ২০-২৫% স্প্রেড  যেমন দিচ্ছে সাথে ৩০-৩৫% বাৎসরিক ক্যাশ ডিভিডেন্ড ও দিচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ চলমান টালমাটাল পুজিবাজার পরিস্থিতিতে এই রিটার্নে  আমি সন্তুষ্ট।

1 টি মন্তব্য:

  1. https://summitpowerinternational.com/summit-gazipur-ii-receives-usd-140-million-project-financing-clifford-capital-and-japan%E2%80%99s-smbc?fbclid=IwAR1ZekuevI_vbyx63HKBh0VvOA3Sl77UtL_2UHi60g8pqfKNr0BVnZTHEEk

    উত্তরমুছুন