যে কোন
বিনিয়োগে মুনাফার পাশাপাশি আপনাকে ঝুঁকির মাত্রা ও বিবেচনায় নিতে হবে। কারন মুনাফা
আর ঝুঁকি পরস্পরের সমানুপাতিক। যে বিনিয়োগে ঝুঁকির মাত্রা কম সেখানে মুনাফার
পরিমাণ কম, যেমনঃ ব্যাংক ডিপিএস, এফডিয়ার, বন্ড। আমরা সবাই জানি শেয়ার বাজারে
বিনিয়োগ ঝুকিপূর্ন। তাই এখান থেকে আপনি ব্যাংক রেটের চাইতে বেশি মুনাফা প্রত্যাশা
করবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই বেশি পরিমাণটি ঠিক করতে গিয়েই আমরা সংখ্যা গরিষ্ঠ
ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা তালগোল পাকিয়ে ফেলি। সহনীয় মাত্রার চাইতে বেশি ঝুঁকি নেয়ার
ফলেই আমরা আমাদের ক্ষুদ্র পুঁজি হারিয়ে সর্বশান্ত হই। ৫০% মুনাফা করার আশায় বিনিয়োগ করার আগে
ভাবুন ৫০% লস মেনে নেবার মত আর্থিক সামর্থ আপনার আছে কি না। ২০% লস করার সামর্থ
নিয়ে ৫০% মুনাফা টার্গেট করা নির্বুদ্ধিতা। ততটুকু লাভেই সন্তুষ্ট থাকুন যতটুকু লস
হলে আপনি তা মেনে নিতে পারবেন।
ছোট
বিনিয়োগকারী হিসেবে আমাদের উচিত নিজ সঞ্চয়ের একটি অংশ শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করা।
কোন ভাবেই ব্যাক্তিগত ঋণ বা মার্চেন্ট ব্যংক থেকে মার্জিন ঋণ নিয়ে ক্ষুদ্র
বিনিয়গকারীদের শেয়ার মার্কেটে আসা উচিত নয়। কারন ১৫-১৮% সুদে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করলে
আপনাকে ২০-৩০% মুনাফা করতে হবে। আর ২০-৩০% মুনাফা ২/৩ টি ট্রেড থেকে করা সম্ভব
হলেও সারা বছর ব্যাপি এই হার ঠিক রাখা প্রায় অসম্ভব যদি আপনি শেয়ার বাজারে অনভিজ্ঞ
(৫ বছরের কম বিনিয়োগ অভিজ্ঞতা) হোন অথবা বাজার পরিস্থিতি প্রতিকূল অবস্থায় থাকে।
ধরুন চাকরী/ব্যবসা থেকে আপনার বাৎসরিক যা আয়
হয় তা থেকে সব খরচ মিটিয়ে ১ লক্ষ টাকা বেঁচে যায়, অর্থাৎ আপনার বাৎসরিক সঞ্চয় ১
লক্ষ টাকা। এর ৫০-৭৫ ভাগ বিনিয়োগ করুন শেয়ার মার্কেটে আর বাকি ২৫-৫০ ভাগ ব্যাংকে
ডিপোজিট করুন। ব্যাংক মাত্র ৬-৯% লাভ দিলেও আপনার পূঁজি সেখানে ১০০% নিরাপদ। আর
শেয়ার মার্কেট এমন একটি জায়গা যেখানে আপনার কিছু ভুল পদক্ষেপ ১০০% পুঁজি হারানোর
জন্য যথেষ্ট। তাই আপনার সব সঞ্চয় শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ না করে ২/৩ টি ভিন্ন
বিন্ন মাধ্যমে বিনিয়োগ করুন। যেমনঃ ব্যাংক ডিপোজিট, বন্ড, স্থাবর সম্পত্তি ও শেয়ার
বাজার।
শেয়ার
মার্কেটে একটি স্টক থেকে আপনি দুই ভাবে মুনাফা করতে পারেনঃ
- কোম্পানির দেয়া বাৎসরিক লভ্যাংশ বা ডিভিডেন্ড থেকে।
- ক্যাপিটাল গেইন (কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রির মাধ্যমে)।
স্বাভাবিক
অবস্থায় একটি স্টকের দাম তখনই বাড়ে যখন ঐ কম্পানিকে ঘিরে, ভাল ব্যবসা থেকে অর্জিত
অধিক মুনাফা এবং তা থেকে কার্ষনীয় লভ্যাংশ প্রদানের সম্ভবনা/প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়।
অর্থাৎ নিকট ভবিষ্যতে ভাল ডিভিডেন্ড আসার প্রত্যাশা থেকেই স্টকের দাম বাড়ে (ক্যাপিটাল
গেইন) যা থেকে আপনি লাভবান হতে পারেন। তাই
বিনিয়োগের জন্য স্টক বাছাই প্রকৃয়ায় সর্ব প্রথম কোম্পানির ভাল ব্যাবসা করার সামর্থ
তথা ভাল ডিভিডেন্ড দেয়ার সামর্থ বিবেচনা করা উচিত।
আমাদের মার্কেটে একটা সময় ছিল যখন সবাই স্টক ডিভিডেন্ড পেতে খুব পছন্দ করত। অবশ্য এখন অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। সাধারন বিনিয়োগকারীগন এখন স্টক ডিভিডেন্ডের চাইতে ক্যাশ ডিভিডেন্ড পেতেই বেশি উৎসাহী। কারন দেরীতে হলেও তারা বুঝতে পেরেছে – Cash is king. স্টক ডিভিডেন্ড মানে কোম্পানি আপনাকে মুনাফার টাকা না দিয়ে তা আবার তার নিজ ব্যবসায় বিনীয়োগ করবে এবং আপনাকে ঐ ব্যবসার আরও কিছুটা মালিকানা দেবে। এখন ঐ ব্যবসা যদি সামনের দিন গুলতে কম মুনাফা করে তবে কম্পানির শেয়ার দর কমে যাবে এবং আপনি যে অতিরিক্ত স্টকগুল ডিভিডেন্ড হিসেবে পেলেন তার মূল্য কমে যাবে। ফলে ক্যাশের চাইতে স্টক ডিভিডেন্ড নেয়ায় আসলে আপনি ক্ষতিগ্রস্থ হলেন। একটি উদাহরণ দেই – ২০০৮ থেকে ২০১১ পর্যন্ত অনেক ব্যাংকই ১০০%, ৭৫%, ৫০% এই রকম উচ্চ হারে স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। পরবর্তীতে উচ্চ স্টক ডিভিডেন্ডের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যাবসা করতে না পারায় ইপিএস যায় কমে, ফলে শেয়ার গুলোর দামও অবধারিত ভাবে কমে যায়। তাই এক সময়ের ৩০০-৪০০ টাকায় বিক্রি হওয়া ব্যাংক স্টক এখন ১০-১৫ টাকায় লেনদেন হচ্ছে।
কেন এমন হল? একটু চিন্তা করলেই উত্তরটা পেয়ে যাবেন। ধরুন ১০,০০০ শেয়ার আছে এমন একটি কোম্পানির বাৎসরিক মুনাফা হল ১,২০,০০০ টাকা। মানে ইপিএস ১২ টাকা। এবার কোম্পানি ঐ ১২ টাকা আপনাকে ক্যাশ না দিয়ে ফেস ভ্যালু ১০ টাকা হিসেবে ১০০% স্টক ডিভিডেন্ড দিল। অর্থাৎ কোম্পানি ১২ টাকার স্থলে আপনাকে দিল ১০ টাকার মালিকানা এবং ঐ ১২ টাকা ব্যাবসায় বিনিয়োগ করল। পরের বছর কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা হল ২০,০০০। ঐ বছর ইপিএস ১২ টাকা ঠিক রাখতে হলে কোম্পানিটিকে মুনাফা কতে হবে ২,৪০,০০০ টাকা মানে মুনাফা ১০০% বাড়াতে হবে। এ বছর ১০০% মুনাফা করা সম্ভব না হলে ইপিএস যেমন কমে যাবে তেমনি স্টকের দাম ও কমে যাবে। তাই ২০-৩০% স্টক ডিভিডেন্ড দিলেই উল্লসিত হবার কিছু নেই। স্টকটি আরও ১ বছর ধরে রাখার আগে অথবা যারা স্টক পাবার আশায় কিনবেন তারা চিন্তা করুন কোম্পানিটি কি সামনের ১ বছরে ২০-৩০% (স্টক ডিভিডেন্ডের সম পরিমাণ) মুনাফা বাড়াতে সক্ষম? যদি উত্তর ‘না’ হয় তবে এই স্টকে বিনিয়োগ করার আগে দ্বিতীয় বার ভাবুন।
আবার অনেকে আছের যারা কম মূল্যের ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেন না কারন, এগুল শুধু ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেয়। ডিভিডেন্ড মৌসুমে দাম খুব একটা বাড়ে না তাই ভাল ক্যাপিটাল গেইন এখান থেকে সম্ভব না। আচ্ছা ৫ টাকা মূল্যের স্টক/ইউনিট থেকে যদি আপনি ১ টাকা ক্যাশ ডিভিডেন্ড পান তবে আপনার মুনাফা কত হবে একটু হিসেব করুন, ২০% হ্যাঁ আপনি ঠিক দেখছেন, ৫ টাকায় ১ টাকা পেলে লাভ দড়ায় ২০%। ডিভিডেন্ডের পর হয়ত শেয়ারটির মূল্য এডজাস্ট হয়ে ৩.৫-৪ টাকায় চলে আসবে। কিন্তু যেহেতু ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে সেহেতু মোট শেয়ার সংখ্যা একই থেকবে। ফলে আগামী বছর কোম্পানির মুনাফা না বড়লেও এটি একই পরিমাণ ডিভিডেন্ড দিতে পারবে এবং দাম অল্প দিনেই আবার ৫ টাকায় চলে আসবে। তাই যারা প্রতিনিয়ত লস করেন তারা নিশ্চিন্তে এই রকম ২০% লাভ দেয়া কোম্পানি গুলোকে টার্গেট করতে পাড়েন। আমাদের মার্কেটে এমন হাজার হাজার বিনিয়োগকারী আছেন যারা সারা বছরে ৫০-১০০ টি ট্রেড করেও বাৎসরিক ২০% মুনাফা করতে পাড়েন না।
আমাদের মার্কেটে একটা সময় ছিল যখন সবাই স্টক ডিভিডেন্ড পেতে খুব পছন্দ করত। অবশ্য এখন অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। সাধারন বিনিয়োগকারীগন এখন স্টক ডিভিডেন্ডের চাইতে ক্যাশ ডিভিডেন্ড পেতেই বেশি উৎসাহী। কারন দেরীতে হলেও তারা বুঝতে পেরেছে – Cash is king. স্টক ডিভিডেন্ড মানে কোম্পানি আপনাকে মুনাফার টাকা না দিয়ে তা আবার তার নিজ ব্যবসায় বিনীয়োগ করবে এবং আপনাকে ঐ ব্যবসার আরও কিছুটা মালিকানা দেবে। এখন ঐ ব্যবসা যদি সামনের দিন গুলতে কম মুনাফা করে তবে কম্পানির শেয়ার দর কমে যাবে এবং আপনি যে অতিরিক্ত স্টকগুল ডিভিডেন্ড হিসেবে পেলেন তার মূল্য কমে যাবে। ফলে ক্যাশের চাইতে স্টক ডিভিডেন্ড নেয়ায় আসলে আপনি ক্ষতিগ্রস্থ হলেন। একটি উদাহরণ দেই – ২০০৮ থেকে ২০১১ পর্যন্ত অনেক ব্যাংকই ১০০%, ৭৫%, ৫০% এই রকম উচ্চ হারে স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। পরবর্তীতে উচ্চ স্টক ডিভিডেন্ডের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যাবসা করতে না পারায় ইপিএস যায় কমে, ফলে শেয়ার গুলোর দামও অবধারিত ভাবে কমে যায়। তাই এক সময়ের ৩০০-৪০০ টাকায় বিক্রি হওয়া ব্যাংক স্টক এখন ১০-১৫ টাকায় লেনদেন হচ্ছে।
কেন এমন হল? একটু চিন্তা করলেই উত্তরটা পেয়ে যাবেন। ধরুন ১০,০০০ শেয়ার আছে এমন একটি কোম্পানির বাৎসরিক মুনাফা হল ১,২০,০০০ টাকা। মানে ইপিএস ১২ টাকা। এবার কোম্পানি ঐ ১২ টাকা আপনাকে ক্যাশ না দিয়ে ফেস ভ্যালু ১০ টাকা হিসেবে ১০০% স্টক ডিভিডেন্ড দিল। অর্থাৎ কোম্পানি ১২ টাকার স্থলে আপনাকে দিল ১০ টাকার মালিকানা এবং ঐ ১২ টাকা ব্যাবসায় বিনিয়োগ করল। পরের বছর কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা হল ২০,০০০। ঐ বছর ইপিএস ১২ টাকা ঠিক রাখতে হলে কোম্পানিটিকে মুনাফা কতে হবে ২,৪০,০০০ টাকা মানে মুনাফা ১০০% বাড়াতে হবে। এ বছর ১০০% মুনাফা করা সম্ভব না হলে ইপিএস যেমন কমে যাবে তেমনি স্টকের দাম ও কমে যাবে। তাই ২০-৩০% স্টক ডিভিডেন্ড দিলেই উল্লসিত হবার কিছু নেই। স্টকটি আরও ১ বছর ধরে রাখার আগে অথবা যারা স্টক পাবার আশায় কিনবেন তারা চিন্তা করুন কোম্পানিটি কি সামনের ১ বছরে ২০-৩০% (স্টক ডিভিডেন্ডের সম পরিমাণ) মুনাফা বাড়াতে সক্ষম? যদি উত্তর ‘না’ হয় তবে এই স্টকে বিনিয়োগ করার আগে দ্বিতীয় বার ভাবুন।
আবার অনেকে আছের যারা কম মূল্যের ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেন না কারন, এগুল শুধু ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেয়। ডিভিডেন্ড মৌসুমে দাম খুব একটা বাড়ে না তাই ভাল ক্যাপিটাল গেইন এখান থেকে সম্ভব না। আচ্ছা ৫ টাকা মূল্যের স্টক/ইউনিট থেকে যদি আপনি ১ টাকা ক্যাশ ডিভিডেন্ড পান তবে আপনার মুনাফা কত হবে একটু হিসেব করুন, ২০% হ্যাঁ আপনি ঠিক দেখছেন, ৫ টাকায় ১ টাকা পেলে লাভ দড়ায় ২০%। ডিভিডেন্ডের পর হয়ত শেয়ারটির মূল্য এডজাস্ট হয়ে ৩.৫-৪ টাকায় চলে আসবে। কিন্তু যেহেতু ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে সেহেতু মোট শেয়ার সংখ্যা একই থেকবে। ফলে আগামী বছর কোম্পানির মুনাফা না বড়লেও এটি একই পরিমাণ ডিভিডেন্ড দিতে পারবে এবং দাম অল্প দিনেই আবার ৫ টাকায় চলে আসবে। তাই যারা প্রতিনিয়ত লস করেন তারা নিশ্চিন্তে এই রকম ২০% লাভ দেয়া কোম্পানি গুলোকে টার্গেট করতে পাড়েন। আমাদের মার্কেটে এমন হাজার হাজার বিনিয়োগকারী আছেন যারা সারা বছরে ৫০-১০০ টি ট্রেড করেও বাৎসরিক ২০% মুনাফা করতে পাড়েন না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন