বিষয় সন্ধান
শুক্রবার, ৩১ জুলাই, ২০১৫
ভ্যালু ইনভ্যাস্টমেন্ট-৩ : FAREASTLIF
বিনিয়োগ সময় কালঃ ডিসেম্বর ২০১৪ থেকে জুলাই ২০১৫, ৮ মাস।
২০১০ এর মার্কেট ক্রেশ হবার পর থেকেই ব্যাংক-বীমা ও আর্থিক খাতের কোম্পানিগুলো থেকে বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। মন্দা বাজারেও যেখানে মার্কেট PE ১৪-১৫ সেখানে এই সেক্টর তিনটির PE ১০ এর নিচে আছে গত ২-৩ বছর ধরে। আর বাজারের যে সেক্টরগুলো সবচেয়ে বেশী মন্দাবস্থায় থাকে সেখানেই লাভ করার সুযোগ সব চেয়ে বেশী পাওয়া যায়। এই সেক্ট্রগুলতে প্রায় সব শেয়ারের দামই যেহেতু কম, সেহেতু সুযোগ সন্ধানী বিনিয়োগকারী হিসেবে আমার একটাই কাজ ছিল – তুলনামূলক ভাবে ভাল ও শক্তিসালী কোম্পানি খুঁজে বের করা।
FAREASTFIL – জীবন বীমা খাতে বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম কোম্পানি যদিও পরিশোধীত মূলধন মাত্র ৫৬ কোটি টাকা। ২৮% প্রাতিষ্ঠানিক ও ৩৭% শেয়ার ব্যাক্তি বিনিয়োগকারীর হাতে থাকায় এখানে বিনিয়োগ তুলানামূলক ভাবে নিরাপদ মনে হয়েছে। আর ২০১৩ সালে কপম্পানিটি ৪০% ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেয়ায় এর আর্থিক সামর্থও প্রমানীত।
সমস্যা একটাই মার্কেটের অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মত জীবন বীমা কম্পানি ৩ মাস পর পর দেয়া প্রান্তিক প্রতিবেদনে EPS, NAV ইত্যাদি তথ্য দেয় না শুধু ঐ সময়ে কত প্রিমিয়াম আয় হয়েছে শুধু তা-ই প্রকাশ করে। ২০১১ এর আগে অবশ্য অন্যান্য কোম্পানির মত বীমা কম্পানিও NAV, EPS প্রকাশ করত, আর সেখান থেকেই আমি জানতাম যে, এই কোম্পানির NAV ৬৮ টাকা। ২০১৩ সালে ৪০% ক্যাশ বোনাস দিয়েছে আর ২০১৪ এর ৩য় প্রান্তিক পর্যন্ত প্রিমিয়াম আয় ছিল ২০১৩ এর চাইতে ৬% বেশি। সুতবাং এ বছর যে ৪০% এর বেশি ডিভিডেন্ড আসবে তা সহজেই অনুমান করা যাচ্ছিল। ফলে আমার এনালাইসিস বলছিল, Benjamin Graham Number (BGN) অনুসারে এই কোম্পানির বাজার মূল্য অনায়াসে ৭৮-৮২ হতে পারে।
Benjamin Graham Number(BGN) = Square Root (22.5*EPS*NAV)
FAREASTLIF = Square Root (22.5*4.28*68) = 80.5
২০১৩ এর অক্টোবরে ডিভিডেন্ড এডজাস্টমেন্টের পর থেকেই দাম কমতে থাকে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি যখন দাম ৭৪-৭৫ তখন আমি প্রথম কিছু শেয়ার কিনি। আর আমার বিনিয়োগ পরিকল্পনা অনুযায়ী আমি কখনই একটি শেয়ার সবটুকু একবারে কিনে ফেলি না। প্রথম বার কেনার সময় ধরেই নেই যে, আমার কেনার পর দাম ১৫-২০% কমে যেতে পারে। তাই যতটুকু অর্থ এই শেয়ারে বিনিয়োগ করার টার্গেট করি তার ১/২ দিয়ে প্রথম বার শেয়ার কিনি, বাকি টুকু দিয়ে আরও ২-৩ কিনি। এপ্রিল – মে মাসের মূল্য পতনের সুযোগ নিয়ে বাকি অর্থেক টাকায়, ৬১ ও ৫৭ মূল্যে আরও কিছু শেয়ার কিনি, ফলে আমার গড় ক্রয় মূল্য দাড়ায় ৬৬ টাকা।
আর প্রত্যাশা অনুযায়ী জুলাই এর শুরুতেই কোম্পানিটি ৩৫% ক্যাশ ও ১০% স্টক বোনাস ঘোষণা করে। ভাল বোনাস আসায় দাম আমার এনালাইসিস মতই ৭৮-৮০ রেঞ্জে চলে আসে। ফলে এই ট্রেডটি থেকে আমার মুনাফা হত প্রায় ১৯% যদি আমি বিক্রি করে দিতাম।
তবে ১৯% মুনাফা তুলে না নিয়ে তা আমি আবারো বিনিয়োগ করার স্বীদ্ধান্ত নিয়ে বোনাস গ্রহন করেছি। ইনশাল্লাহ আগামী বছর আরও ভাল কিছু হবে, আর যদি না হয় তবে সব বিক্রি করে দিয়ে লাভ তুলে নেবার সুযোগতো আছেই।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন