বিষয় সন্ধান

বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৫

বাস্তব জ্ঞানঃ IFILISLMF1




সময়কালঃ ২৭শে মে - ২০শে আগস্ট, ২০১৫। মাত্র ৩ মাস।

পুঁজি বাজারে সফল হবার জন্য Common Sense তথা বাস্তব জ্ঞানের যথাযথ প্রয়োগের গুরুত্ব অপরিসীম। আর মার্কেট সম্পর্কিত এই বাস্তব জ্ঞান সময়ের সাথে সাথেই অর্জিত হয়। অর্থাৎ বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করলে প্রতিটি ট্রেড থেকেই লাভ/লসের পাশাপাশি আপনি কিছু না কিছু শিখবেন। অভিজ্ঞতা লব্ধ এই শিক্ষা অমূল্য সম্পদ কারন পুঁজি বাজার সম্পর্কিত পুথিগত বিদ্যা বা ট্রেনিং কোন কিছু থেকেই আপনি এই শিক্ষা লাভ করতে পারবেন না। তাই পুঁজি বাজারে শুরুর ৪-৫ বছর কষ্ট করে টিকে থাকতে পারলে আপনার বিনিয়োগ ভবিষ্যৎ ভাল হবার সম্ভবনা যথেষ্ট। এই সময়ের অর্জিত অভিজ্ঞতা আপনাকে ভবিষ্যতে ঠিক সময়ে ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে নিশ্চিত ভাবেই সাহায্য করবে।

সাধারণত কোন স্টক বাছাই কালে আমি কোন না কোন বিনিয়োগ স্ট্রেটেজি অনুসরণ করি। কিন্তু
IFILISLMF1 স্টকটি বাছাই করার ক্ষেত্রে আমি কোন স্ট্রেটেজি-ই অনুসরণ করিনি। শুধু মাত্র বিগত ৭ বছরের ক্ষুদ্র অভিগ্যতা থেকেই বুঝতে পেরেছিলাম যে, কিছুটা সময় ধৈর্য ধারন করতে পারলেই স্টকটি থেকে আকর্ষনীয় মুনাফা করা সম্ভব হবে।



মে,২০১৫ এর শেষ দিকে মার্কেট মূলত ডিসেম্বর ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর ডিভিডেন্ড নিয়ে মহা ব্যাস্ত। প্রায় সবাই প্রবল উৎসাহে ডিসেম্বর ক্লোজিং কোম্পানি কেনাবেচা করছে। অথচ জুন ক্লজিং কোম্পানিগুলো তখন প্রায় নিশ্চুপ। বিগত নয় মাসে ০.৭২ টাকা আয় করা IFILISLMF1 মিউচ্যুয়াল ফান্ডটি তখন ৬ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। গত বছর অর্থাৎ ২০১৪ সালে ১ টাকা বাৎসরিক আয় করা ফান্ডটি ১০% ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেয়ায় দাম উঠেছিল ৭.৪ টাকা। এই বছর ফান্ডটির শেষ প্রান্তিক অথা এপ্রিল-জুন,২০১৫ মার্কেটের অবস্থা বেশ ভালই গিয়েছে। আমার মত সাধারন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা যেখানে এই সময়ে ভাল মুনাফা করতে পেরেছে সেখানে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলর ভাল না করার কোন কারন নেই। তাই এই বছরও ফান্ডটির বাৎসরিক আয় ১ টাকার আশপাশেই হবে। ফলে গত বছরের ন্যায় এই বছরও ১০% ক্যাশ ডিভিডেন্ড আসার সম্ভবনা যথেষ্ট। ভাবুন ৬ টাকায় আপনি যদি ১ টাকা মুনাফা পান তবে ১৬% মুনাফা দেয়া স্টকের দাম বৃদ্ধি না পাবার কী কারন ঘটতে পারে? আর দাম না বাড়লে তেমন কোন ক্ষতিও নেই, ডিভিডেন্ড নিলেও ১৬% মুনাফা হবে। অতি সাধারন এই বিবেচনা বোধ থেকেই মে মাসের ২৯ তারিখে ৬ টাকা মূল্যে যথা সম্ভব বেশি পরিমাণ IFILISLMF1 ক্রয় করি।

জুন-জুলাই, ২ মাসের অপেক্ষা শেষেই বাজারের মনোযোগ জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর দিকে চলে আসে, কারন ততদিনে প্রায় সব ডিসেম্বর ক্লোজিং কোম্পানির ডিভিডেন্ড ডিক্লারেশন হয়ে গেছে। ফলে বাজারে জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর চাহিদা বাড়ায় এই স্টকটির দামও ৬ টাকা থেকে ৬.৫ টাকায় চলে আসে। আর আগস্টের ২য় সপ্তাহেই আমার প্রত্যাশা অনুযায়ি মিউচ্যুয়াল ফান্ডটি ১.০২ টাকা বাৎসরিক আয়ের বিপরীতে ১০% ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষনা করে। ফলে ১০-১২ দিনের ব্যবধানেই দাম ৬.৫ থেকে ৭ টাকার ঘরে চলে আসে। আর আজ (২০ শে আগস্ট, ২০১৫) ভাল দাম পেয়ে হাতে থাকা সবগুলো ষ্টক ৭.২ টাকায় বিক্রি করে দিলে মুনাফা তুলে নিয়েছি।

৬ টাকার বিনিয়োগ ৩ মাসেই ১.২ টাকা লাভ দিয়েছে। ব্রকারেজ কমিশন বাদ দিলেও মুনাফার হার দাঁড়ায় প্রায় ১৮.৯%। এক কথায় অসাধারন একটি ট্রেড কারন বিগত তিন মাসে এক বারের জন্যও এই স্টকটি নিয়ে আমি কোন টেনশন অনুভব করিনি। সল্প সময়ে নিশ্চিত-নির্ভার বিনিয়োগ যখন ১৮.৯% মুনাফা দেয় তখন আনন্দে আটখানা না হয়ে উপায় কি বলুন।      

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন