বিশ্বব্যাপি সমাদৃত ইঞ্জিন ওয়েল ব্রেন্ড মবিল, যা ১৫০ বছর ধরে সুনামের সাথে গনপরিবহন ও শিল্প খাতের যান্ত্রিক ইঞ্জিনসমূহের সুরক্ষা ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আমেরিকান এক্সন-মবিল কোম্পানির এই ইঞ্জিন ওয়েল ব্রান্ডটি এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছে যে, আমাদের দেশে ইঞ্জিন ওয়েলের নামই হয়ে গেছে মবিল। দেশের জনপ্রিয় এই ব্র্যান্ড এর একমাত্র প্রস্তুতকারক ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মবিল যমুনা বাংলাদেশ (এমজেএল বিডি)।
দেশে ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহৃত হয় মূলত পরিবহন ও শিল্প খাতে। রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত স্থাপিত হচ্ছে নতুন নতুন শিল্প কল কারখানা। ক্রমবর্দ্ধনশীল ইঞ্জিন ওয়েল খাতের প্রায় ৩৮% ব্যবসা দখলে নিয়ে এমজেএল মার্কেট লিডার। দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ স্থানে থাকা কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত মার্কেট শেয়ারের চাইতেও এমজেএল এর মার্কেট শেয়ার বেশী। দেশে কল-কারখানা ও পরিবহন খাত যে হারে বাড়ছে তাতে ভবিষ্যতে ইঞ্জিন ওয়েলের ব্যবসা আরো বড় হবে নিশ্চিত।
মূল ব্যবসা ইঞ্জিন ওয়েলের পাশাপাশি এমজেএল বছর তিনেক আগে তাদের ৬১% মালিকানার সাবসিডিয়ারী কোম্পানি ওমেরা পেট্রোলিয়াম এর মাধ্যমে এলপিজি ব্যবসা শুরু করেছে। দুই লাখ টন বাৎসরিক উৎপাদন ক্ষমতার এই কোম্পানি ২০১৭ সালে ৫ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে ৮৭ হাজার টন এলপিজি বিক্রি করেছে। গত বছরের তুলনায় এই বছর বিক্রি বেরেছে ১৬১%। আগামী বছর ৬৫% বিক্রি বাড়ানোর টার্গেট নিয়ে নতুন বছর শুরু করবে ওমেরা এলপিজি।
উল্লেখ্য আগামী বছরে কোম্পানিটি তাদের বাৎসরিক উৎপাদন ক্ষমতার দুই থেকে তিন লাখ টনে উন্নীত করবে। দেশের ৫ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে নিজেদের উতপাদন ক্ষমতা ৩ লাখ টনে উন্নিত করে এবং বিক্রি বাড়িয়ে এলপিজি ব্যাবসায়ও তারা দেশের এক নম্বর হওয়ার পথে রয়েছে। প্রাকৃতিক গ্যাস দ্রুত কমে আসায় এলপিজি ও এলএনজি কে বিকল্প ভাবা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে এলপিজির ব্যবহার আগামী বছরগুলতে কয়েক গুন বাড়বে বলে এই খাতের ব্যবসায়ীরা অনুমান করছেন।
ব্যাবসায়ীক সম্ভবনাঃ আর্থিক দিক থেকে এমজেএল খুবই শক্তিশালী একটি কোম্পানি, এর সর্বশেষ ক্রেডিট রেটিং AA+। মূল কোম্পানি এমজেএল এর কোন টার্ম লোন নাই - যা খুবই আশা ব্যাঞ্জক। এই বছর প্রকাশিত ৬.৯১ টাকা ইপিএস এর ৬.৫৮ টাকা এসেছে এমজেএল এর ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবসা থেকে। বাকি ০.৩৩ টাকা এসেছে সাবসিডিয়ারী কোম্পানিগুল থেকে। গত বছরের তুলনায় এই বছর ইপিএস বেড়েছে ১.২ টাকা যা শতাংশের হিসেবে প্রায় ২১% বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রায় ১০০ কোটি টাকার বড় টার্মলোন আছে সাবসিডিয়ারীগুলোর। আশার কথা সেই কোম্পানিগুলো সময় মত লোনের কিস্তি শোধ করে মুনাফা করছে। প্রতি বছর ৫০ কোটি টাকা লোন শোধ হচ্ছে। সেই হিসাবে আগামী দুই বছরে এই লোন শোধ হয়ে যাবে। লোন শোধ হয়ে গেলে সাবসিডিয়ারী থেকেই এমজেএল এর আয় এখনকার হিসেবে শেয়ার প্রতি ১'৬ টাকা বাড়বে। আর পরিকল্পনা মত গ্যাস বিক্রি বাড়াতে পারলে আয় আরও বাড়বে নিঃসন্দেহে।
প্রায় ১০০ কোটি টাকার বড় টার্মলোন আছে সাবসিডিয়ারীগুলোর। আশার কথা সেই কোম্পানিগুলো সময় মত লোনের কিস্তি শোধ করে মুনাফা করছে। প্রতি বছর ৫০ কোটি টাকা লোন শোধ হচ্ছে। সেই হিসাবে আগামী দুই বছরে এই লোন শোধ হয়ে যাবে। লোন শোধ হয়ে গেলে সাবসিডিয়ারী থেকেই এমজেএল এর আয় এখনকার হিসেবে শেয়ার প্রতি ১'৬ টাকা বাড়বে। আর পরিকল্পনা মত গ্যাস বিক্রি বাড়াতে পারলে আয় আরও বাড়বে নিঃসন্দেহে।
বাংলাদেশ সরকার প্রাকৃতিক গ্যাস সংকটের প্রেক্ষিতে বাসাবাড়িতে পাইপ লাইন গ্যাসের বিকল্প হিসেবে এলপি গ্যাসকে প্রমোট করেছে। ধীরে ধীরে পরিবহন খাতে সিএনজি এর পরিবর্তে এলপিজি গ্যাসের ব্যবহার করারা পরিকল্পনা হচ্ছে। এমজেএল এর ওমেরা বাজারে আসার দুই বছরে মার্কেটের ১৭ শতাংশ ব্যাবসা নিজেদের দখলে নিয়েছে।
সব দিক বিবেচনা করলে এমজেএল এর সম্ভবনা অনেক। সম্ভবনা কাজে লাগিয়ে কোম্পানিটির ব্যবসায়িক অগ্রগতি ও চমৎকার। ব্যবসায় ভাল করলেও ষ্টক মার্কেটে শেয়ারটি সেই ভাবে মূল্যায়িত হচ্ছে না। স্টক টি বর্তমানে ১১০-১২৫ রেঞ্জে আটকে আছে। অথচ ৩ /৪ বছর পরে ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হবার মত যথেষ্ট সম্ভবনা এই কোম্পানির আছে। আমার মনে হচ্ছে নতুন বছর ২০২০-২১ তে আমরা ভিন্ন এক এমজেল কে দেখব পুজিবাজারে।
তথ্যসূত্রঃ এমজেএল বিডি এন্যুয়াল রিপোর্ট ২০১৬-১৭।
আপডেট-১ (২০১৮-০১-০৮)
এমজেএল এর একটি বাল্ক ক্রুড অয়েল কেরিয়ার টেংকার আছে। ১৯৯৭ সালে তৈরী ৫৬ টন ধারণ ক্ষমতার জাহাজটির নাম ওমেরা কুইন। ২০১৬-১৭ সমাপ্ত বছরে এটি থেকে রেভিনিঊ এসেছে ১২৩ কোটি। ৫৬ কোটি ব্যায় বাদ দিয়ে অপারেটিং প্রফিট হয়েছে ৬৭ কোটি। আর ২৭.৫% কর্পোরেট টেক্স বাদ দিলে এই সমুদ্রগামী জাহাজ থেকে আয় ছিল ৪৮ কোটি টাকা, কোম্পানির ইপিএস এ এর অবদান ১.৬ টাকা!
একই রকম আরেকটি জাহাজ ওমেরা লিগেসি কেনা হয়েছে ১৩০ কোটি টাকায়। সেপ্টেম্বর ২০১৭ তে কেনা জাহাজটি ইতিমধ্যেই অপারেশনাল। ২০০৫ সালে তৈরী ৬০ টনের এই অয়েল টেঙ্কার থেকেই ২০১৭-১৮ প্রান্তিকে এমজেএল এর সম্ভাব্য ইপিএস বাড়তে পারে ১+ টাকা।
Trading Code: | MJLBD |
News: | The Company has informed that the Board of Directors has approved the procurement of an Aframax Tanker of DWT 107,169 Metric Ton, at a price of USD 16,300,000.00 only. |
Post Date: | 2017-08-21 |
ইঞ্জিন অয়েল ও এলপিজির ব্যবসার গ্রোথ প্রত্যাশা মত হলে এই বছরেই কোম্পানিটির ইপিএস কিন্তু ৯-১০ টাকা হয়ে যেতে পারে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রমাগত তেলের মূল্য বৃদ্ধি কিঞ্চিৎ চিন্তার বিষয়। যদি ইপিএস হিসাব মত ৯-১০ টাকা হয়েই যায় তবে দেখার মত ঘটনা হবে

Earning Call ( Second Quarter 2017-18)
Update-3 (News Source - The Financial express 13-10-2018)
এমজেএল [MJLBD] ব্যবসা পর্যালচনা (সাল ২০১৭-১৮)
টপ লাইনঃ বিক্রি প্রবৃদ্ধি- ২৪%, নিট মুনফা প্রবৃদ্ধি- ৮.২%
জাহাজ ও ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবসাঃ নিট মুনফা কমেছে প্রায় ১১.৮%। গত বছর (২০১৬-১৭) শেয়ার প্রতি আয় যেখানে ছিল ৬.৫৮ টাকা সেখানে এই বছর আয় হয়েছে ৫.৮৪ টাকা। আয় কমার প্রধান কারন সমূহঃ
• তেল ট্যাংকার ওমেরা কুইন রেগুলেটরি মেন্টেনেন্স এর কারনে প্রায় ২.৫ মাস বসে ছিল। ফলে ট্যাংকার ব্যবসায় আয় ব্যাপক ভাবে কমেছে। গত বছর এই খাতে কড় পূর্ববর্তী আয় ছিল ৬৬ কোটি যা এই বছর নেমে আসে ৪১ কোটি তে।
• আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম প্রায় দিগুণ বেড়ে যাওয়া, দেশে ডলারের দাম প্রায় ৪% বেড়ে যাওয়া এবং ব্যাংক সুদ হার বেড়ে যাওয়ায় ইঞ্জিন ওয়েল খাতে রেভিনিউ বাড়লেও কড় পূর্ববর্তী প্রায় ৬৫ কোটি টাকা কম হয়েছে।
এল্পিজি গ্যাস ব্যবসাঃ জাহাজ ও ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবসায় আয় কমে গেলেও এমজেএল
এর কন্সোলিডেটেড আয় বৃদ্ধির পেছনে প্রধান অবদান ছিল ওমেরা পেট্রলিয়াম। গত ১
বছরে গ্যাস বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৫৩.৭%। ২০১৬-১৭ সালে ৮০ হাজার টনের
বিররীতে ২০১৭-১৮ সালে বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ২৩ হাজার টন। ফলে রেভিনিউ ও নিট
মুনফাতের ব্যপক উত্থান হয়েছে। এই বছর বিক্রি প্রবৃদ্ধি হয়েছে- ৬২.৭%, নিট
মুনফা প্রবৃদ্ধি- ৪১৭%। ৯.৬৫ কোটি নিট মুনফার বিপরীতে এই বছর মুনফা হয়েছে
প্রায় ৫০ কোটি!
২০১৮-১৯ সালের প্রত্যাশাঃ
ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবসা- আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি ও দেশে ডলারের দাম বৃদ্ধির ট্রেন্ড অব্যাহত থাকায় ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবসায় ইতিবাচক কিছু প্রত্যাশা করা যাচ্ছে না।
তেল ট্যাংকার ব্যবসা - ওমেরা কুইন রেগুলেটরি মেন্টেনেন্স শেষে আবার অপারেশনাল হয়েছে। পাশাপাশি নতুন তেল ট্যাংকার ওমেরা লিগেসি জাহাজ বহরে যুক্ত হওয়ায় আগামী বছর তেল ট্যাংকার ব্যবসায় বড় মুনফার সম্ভবনা আছে।
এল্পিজি গ্যাস ব্যবসা- ২০১৮ সালে দেশের এল্পিজি খাতে ৩৫% চাহিদা বৃদ্ধি প্র্যাত্যাশা করা হচ্ছে। ওমেরা পেট্রলিয়াম এই বর্ধিত বাজার ধরতে ইতিমধ্যেই বোটলিং ক্যাপাসিটি ২ লাখ টন থেকে ৩ লাখ টনে উন্নিত করেছে। ওমেরা সিলিন্ডার তার উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৮৫% বাড়িয়ে বাৎসরিক সিলিন্ডার সংখ্যা ৬ লাখে উন্নিত করেছে। নদী পথে গ্যাস পরিবহনের জন্য আরো ২ টি বার্জ যুক্ত হওয়া এখন মোট বার্জের সংখ্যা হয়েছে ৩ টি। পাশাপাশি এল্পিজি স্টোরেজ কেপাসিটি ৫,০০০ টন থেকে ৮,০০০ টনে উন্নিত করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে।
৩ বছরের সময়কাল নিয়ে বিনিয়োগ শুরু করার পর ১ম বছর শেষ হল। এই সময়ে প্রত্যাশিত গ্রোথ রেট ছিল ৭-১১%। এই বছর ৮.২% গ্রোথ অর্জিত হয়েছে। ২য় বছরে এল্পিজি ও তেল ট্যাংকার ব্যবসার সৌজন্যে ১৫-২০% গ্রোথ আশা করছি। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ১-২ বছরে (২০২০-২০২১) এমজেএল এর কন্সলিডেটেড ইপিএস হতে পারে ৮-৮.৫ টাকা।
২০১৮-১৯ সালের প্রত্যাশাঃ
ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবসা- আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি ও দেশে ডলারের দাম বৃদ্ধির ট্রেন্ড অব্যাহত থাকায় ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবসায় ইতিবাচক কিছু প্রত্যাশা করা যাচ্ছে না।
তেল ট্যাংকার ব্যবসা - ওমেরা কুইন রেগুলেটরি মেন্টেনেন্স শেষে আবার অপারেশনাল হয়েছে। পাশাপাশি নতুন তেল ট্যাংকার ওমেরা লিগেসি জাহাজ বহরে যুক্ত হওয়ায় আগামী বছর তেল ট্যাংকার ব্যবসায় বড় মুনফার সম্ভবনা আছে।
এল্পিজি গ্যাস ব্যবসা- ২০১৮ সালে দেশের এল্পিজি খাতে ৩৫% চাহিদা বৃদ্ধি প্র্যাত্যাশা করা হচ্ছে। ওমেরা পেট্রলিয়াম এই বর্ধিত বাজার ধরতে ইতিমধ্যেই বোটলিং ক্যাপাসিটি ২ লাখ টন থেকে ৩ লাখ টনে উন্নিত করেছে। ওমেরা সিলিন্ডার তার উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৮৫% বাড়িয়ে বাৎসরিক সিলিন্ডার সংখ্যা ৬ লাখে উন্নিত করেছে। নদী পথে গ্যাস পরিবহনের জন্য আরো ২ টি বার্জ যুক্ত হওয়া এখন মোট বার্জের সংখ্যা হয়েছে ৩ টি। পাশাপাশি এল্পিজি স্টোরেজ কেপাসিটি ৫,০০০ টন থেকে ৮,০০০ টনে উন্নিত করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে।
৩ বছরের সময়কাল নিয়ে বিনিয়োগ শুরু করার পর ১ম বছর শেষ হল। এই সময়ে প্রত্যাশিত গ্রোথ রেট ছিল ৭-১১%। এই বছর ৮.২% গ্রোথ অর্জিত হয়েছে। ২য় বছরে এল্পিজি ও তেল ট্যাংকার ব্যবসার সৌজন্যে ১৫-২০% গ্রোথ আশা করছি। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ১-২ বছরে (২০২০-২০২১) এমজেএল এর কন্সলিডেটেড ইপিএস হতে পারে ৮-৮.৫ টাকা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন